খোরশেদ আলম বাবুল।
শরীয়তপুর: শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নে ভিজিএফ এর চাল বিতরণে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। জালিয়াতি চক্রের সাথে জাড়িত সন্দেহে ৪ ইউপি সদস্যের নাম প্রকাশ পেয়েছে। এ বিষয়ে পালং মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে ইউপি সচিব। প্রাথমিক ভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এমন তথ্য প্রকাশ করেছেন ইউপি নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান।
ইউনিয়ন পরিষদ সূত্র জানায়, সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়ন পরিষদে ১ সেপ্টেম্বর ভিজিএফ’র চাল বিতরণ করা হয়েছে। ২০৬১ জনের মধ্যে ১০ কিলোগ্রাম করে চাল বিতরণের জন্য ৩টি ভিন্ন রংগের স্লিপ বিতরণ করেন। সংরক্ষিত মহিলা সদস্য-১ সুফিয়া বেগম, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য-৩ শাহিদা বেগম, সাধারণ সদস্য-১ শাহ আলম সরদার ও সাধারণ সদস্য-৮ কালাম মাদবর ষড়যন্ত্র করে চাল বিতরণ সিস্নপ স্কিনার মেশিনের মাধ্যমে ডুপ্লিকেট প্রিন্ট করে বহুগুন স্লিপ তৈরী করে এবং নিজস্ব লোকদের মধ্যে বিতরণ করে। ১ সেপ্টেম্বর সকালে চাল বিতরণ শুরু হলে ইউপি সদস্যদের নির্দেশ মতে ডুপ্লিকেট স্লিপ দিয়ে চাল গ্রহন করে। এতে প্রকৃত গরীব অসহায় লোক ভিজিএফ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত যে সকল ডুপ্লিকেট স্লিপধারী চিহ্নিত হয় তারা অভিযুক্ত ইউপি সদস্যদের কাছ থেকে সিস্নপ পেয়েছে বলে জানিয়েছে।
সাথে আসল স্লিপ ছিল তবুও ভিজিএফ চাল না পেয়ে আঙ্গারিয়া ইউপি ১নং ওয়ার্ড চরপাতাং এলাকার শাহজাহান মোল্যা, ফজলে মোল্যা, দেলোয়ার মোল্যা, ইদ্রিস মোল্যা ও মজিবর মোল্যা জানায়, তাদের মেম্বার শাহ আলম সরদার স্লিপ দিয়েছে। ভিজিএফ চাল আনতে পরিষদে গিয়ে দেখে চাল শেষ। এমনি ভাবে গরীব অসহায়দের সাথে প্রতারণা করেছে সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য সুফিয়া বেগম-১ ও শাহিদা বেগম-৩ এবং সাধারণ সদস্য শাহ আলম সরদার-১ ও কালাম মাদবর-৮ নং ওয়ার্ড।
আংগারিয়া ইউপি সচিক ও অভিযোগকারী মাসুদ পারভেজ বলেন, চাল বিতরণের সময় ২০৫টি জাল স্লিপ আটক করি। জাল সিস্নপধারী প্রত্যেকেই সংরড়্গিত মহিলা সদস্য সুফিয়া, শাহিদা ও সাধারণ সদস্য শাহ আলম এবং কামাল মাদবরের কথাই বলেছে। জাল স্লিপের মাধ্যমে চাল গ্রহন করায় আসল স্লিপধারীদের চাল দিতে পারি নাই তাই আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। তাই থানায় ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছি।
ট্যাগ অফিসার সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা উত্তম কুমার ঘোষ বলেন, চেয়ারম্যান, মেম্বার ও সচিবের প্রক্রিয়াগত ভুলের কারণে এটা হয়েছে। সিস্নপে যদি সুবিধাভোগীর নাম, ওয়ার্ডসহ চেয়ারম্যান-মেম্বারের স্বাক্ষর থাকতো তাহলে এটা হতো না। বেশী জাল স্লিপ আসছে ১, ২, ৩, ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড থেকে। যাহাদের কাছে জাল স্লিপ ছিল তারা বলেছে স্লিপ দোকানে বা বাড়িতে রেখে আসছে। সেখান থেকে তারা গ্রহন করেছে। সুনির্দিষ্ট কাউকে দায়ী করতে পারে নাই তারা। সংবাদ পেয়ে ডিআরও গিয়ে চাল বিতরণের নির্দেশ প্রদান করে। তাই সকল চাল বিতরণ হয়েছে। কেউ যদি চাল না পেয়ে থাকে তাহলে চেয়ারম্যান-মেম্বার দিতে বাধ্য।
অভিযুক্ত মহিলা সদস্য শাহিদা বেগমের সাথে আলাপ করতে ব্যর্থ হই। তখন জানা যায়, তার স্বামী ছালাম হাওলাদার চাল বিতরণে নেতৃত্ব দিয়েছে। ছালাম হাওলাদারের সাথে আলাপ কালে জানায়, স্লিপ দিয়েছে চেয়ারম্যান। আমরা শুধু বিতরণ করেছি। চেয়ারম্যান জাল স্লিপ দিয়েছে তাই বিতরণ করেছি। আমরাতো আর জাল স্লিপপ বুঝি না। সচিব আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। আইনে যা হবে তাই মেনে নিব।
আংগারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, আমাকে হেও করার জন্য মহিলা সংরক্ষিত সদস্য সুফিয়া, শাহিদা ও সাধারণ সদস্য শাহ আলম, কালাম চক্রান্ত করেছে। চাল বিতরনের স্লিপ জাল কপি করে এলাকায় বিতরণ করেছে। জাল স্লিপ দিয়ে চাল নেয়ায় আসল স্লিপপধারীরা চাল পায় নাই। আমি ইকরা মাদরাসার লিল্লাহ্ বর্ডিং এ ১০টা স্লিপ দিয়েছি সেখানেও চাল দিতে পারি নাই। সচিব থানায় অভিযোগ করেছে। ইউএনও সাহেব তদন্ত কমিটি করে বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।