এমবাপ্পেডেস্ক নিউজ :: এমবাপ্পে। নামটির মানে করলে দাঁড়ায় জীবনের গান, গতি এবং দশের মঙ্গল। ফ্রান্স তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে ফ্রান্সের জন্য গান, গতি এবং  মঙ্গল তিনই উপহার দিয়েছন। মাঠে যেমন গতি দেখিয়েছেন, স্টেডিয়ামে ধ্বনি তুলেছেন মুহুমুহু গানের। ফ্রান্সকে নিয়ে গেছেন শেষ আটে। করেছেন জোড়া গোল। এছাড়া ম্যাচের শুরুতেই আদায় করেছেন এক পেনাল্টি। অথচ বয়স তার মোটে ১৯। এখনো মুখের কচি ভাব যায়নি। মুখে গজায়নি দাঁড়ি-গোঁফ। সেই এমবাপ্পে আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স ম্যাচের বড় ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন। দলকে এনে দিয়েছেন ৪-৩ গোলের জয়।

দ্বিতীয় রাউন্ডের উদ্বোধন হয়েছে ফ্রান্স-আর্জেন্টিনা ম্যাচ দিয়ে। পুরো ম্যাচে ছড়িয়েছে দারুণ রোমাঞ্চ। ফ্রান্স গোল দিয়ে এগিয়ে গেছে তো আর্জেন্টিনা ফিরেছে সমতায়। আবার এগিয়ে আর্জেন্টিনা এগিয়ে ফ্রান্স সমতায়। ৪-২ গোলে ফ্রান্স এগিয়ে যাওয়ার পর ৯০ মিনিটে আবার আর্জেন্টিনার গোল ব্যবধান কমানো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৪-৩ গোলে হেরে রাশিয়া বিশ্বকাপের শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিয়েছে আর্জেন্টিনা। ফ্রান্স উঠে গেছে শেষ আটে।

ম্যাচের ১৩ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি থেকে গোল করে ১-০ গোলের লিড নেয় ফ্রান্স। এরপর ৪১ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত এক শট নিয়ে আর্জেন্টিনাকে সমতায় ফেরান ডি মারিয়া। দ্বিতীয়ার্ধের শরুতেই মারকোদোর গোলে ২-১ গোলের লিড নেয় আর্জেন্টিনা।

৪৮ মিনিটে মেসির শটে পা ছুঁইয়ে গোল দেন মারকেদো। কিন্তু বেশিক্ষণ তাদের লিড ধরে রাখতে দিলেন না ফ্রান্স ডিফেন্ডার প্যাভার্ড। ৫৭ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোল করে ২-২ সমতা করে ফেললেন তিনি। আর তার সাত মিনিট পরে ম্যাচের ৬৪ মিনিটে এমবাপ্পে দারুণ এক সাজানো কৌশল থেকে  গোলে ৩-২ গোলের লিড নেয় ফ্রান্স। এরপর ৬৮ মিনিটে আবার এমবাপ্পে শো। নিজের দ্বিতীয় গোল এবং আর্জেন্টিনার জালে চতুর্থ গোল দিয়ে দিলেন এমবাপ্পে।

প্রথমে মাঝমাঠ থেকে এমবাপ্পে দারুণ এক বল ধরে আর্জেন্টিনার বক্সে ঢুকে যান। তাকে ফাউল করেন আর্জেন্টিনা রক্ষণভাগের খেলোয়াড় রোহো। পেনাল্টির বাঁশি বাজাতে দেরি করেননি রেফারি। তা থেকে গোল করেন গ্রিজম্যান। রোহোর ফাউলটি কিছুটা অপ্রয়োজনীয় ছিল। ট্যাকল করে হলুদ কার্ড দেখেন নাইজেরিয়ার বিপক্ষে গোল করে দলকে জয় এনে দেওয়া রোহো। আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক হয়তো বল নিয়ন্ত্রনে নিতে পারতেন। তবে রোহোর ফাউলে পিছিয়ে পড়ে আর্জেন্টিনা।

এমবাপ্পেএরপর ম্যাচের ৪১ মিনিটে বানেগার পাস ধরে গোলে দুর্দান্ত শট নেন ডি মারিয়া। বারের কোনা দিয়ে মারা শটটি ঠেকানোর জন্য ঝাপিয়ে পড়েন ফ্রান্স গোলরক্ষক হুগো লরিস। কিন্তু শটটি ঠেকানোর সাধ্য ছিল না তার। তার গোল থেকে ১-১ গোলের সমতা নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে আর্জেন্টিনা।

এর আগে ম্যাচের ৮ মিনিটে ভালো একটি ফ্রি কিক পায় ফ্রান্স। অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ তারকা গ্রিজম্যান। কিন্তু গোলে পোস্টে লেগে বল ফিরে আসে। ১৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল খাওয়ার পরে ২১ মিনিটে আবার ফ্রি কিক পায় ফ্রান্স। এবারও এমবাপ্পে। দারুণ গতি নিয়ে আর্জেন্টিনার অর্ধে ঢুকে যান। আর একটুর জন্য কেবল আর্জেন্টিনার বক্সের মধ্যে পড়েননি এমবাপ্পে।

তাকে ট্যাকল করে হলুদ কার্ড দেখেন ত্যাগলিয়াফিকো। ফ্রি কিক নেন পগবা। সামান্যের জন্য গোলবারের ওপর দিয়ে যায় তার শটনি। ২৬ মিনিটে আবার ঢুকে পড়েন গ্রিজম্যান। কিন্তু তার ছোট ক্রসটি ধরে ফেলেন আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক আরমানি।

প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনা ম্যাচের ৬৩ ভাগ বল পায়ে নিয়ে খেলেছে। কিন্তু ফ্রান্স আক্রমণ শেনেছে তিনটি। শুরুতেই ফ্রান্সের পাল্টা আক্রমণে ত্রস্ত ছিল আর্জেন্টিনা। আর মেসিরা প্রথমার্ধে গোলে শট নিতে পেরেছেন মাত্র একটি। তাতেই গোল পেয়ে গেছে আলবেসেলেস্তেরা। আর্জেন্টিনা অবশ্য আরও দুটি সুযোগ তৈরি করেছিল। কিন্তু মেসিকে বক্সের মধ্যে গ্রিজম্যানের ট্যাকলে বল হারাতে হয়। এছাড়া পাভনের ভালো একটি ক্রস নিয়ন্ত্রনে নিতে পারেনি আর্জেন্টিনা।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here