“আমরা চাষাবাদ করতে চাই, আমরা পানির ন্যায্য হিস্যা চাই”মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি :: “আমরা চাষাবাদ করতে চাই, আমরা পানির ন্যায্য হিস্যা চাই” এ দাবিতে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার শতশত কৃষক মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে। উপজেলার সেখাউ খালের বাঁধ অপসারণ ও খাল দখলের প্রতিবাদে শুক্রবার (২০এপ্রিল) সকাল ১০ টায় খালের দুই পাড়ে এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে প্রশাসণের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বালিয়াতলী ইউনিয়নের চার কিলোমিটার দীর্ঘ এই প্রশস্ত সেখাউ খাল। আগে মানুষ এই খালে দল বেঁধে জাল ও বরশি দিয়ে মাছ শিকার করতো। ধান ক্ষেতে সেচ দিতো। পাঁচ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ খালের পানি ব্যবহার করতো নিত্য প্রয়োজনে। এখন তা দুই প্রভাবশালীর দখলে।

খালের পাঁচটি পয়েন্টে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় এখন খালে পা ভিজালেও হুমকির সাথে মামলায় জড়ানো হচ্ছে। খালের দুই পাড়ের শতশত কৃষক জমিতে সেচ দিতে না পারায় চাষাবাদ বন্ধ। অথচ খালে সরকারিভাবে অর্ধকোটি টাকা খরচ করে করা হয়েছে সেচ সুবিধার জন্য দুটি কালভার্ট ও মানুষের যোগাযোগের জন্য দুটি ব্রিজ।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বালিয়াতলী ইউনিয়নের ইউসুফ আলী ও আলতাফ হোসেন সরকারি এই খালে একাধিক বাঁধ দিয়ে দখল করে রেখেছে। এমনকি ওই বাঁধ কেটে দেয়ার জন্য চাপ দিলে খালকে নিজেদের মাছের ঘের দেখিয়ে গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মাছ চুরির মিথ্যা মামলা পর্যন্ত করা হয়েছে। এসব নিয়ে এখন সোনাপাড়া, পক্ষিয়াপাড়া, নলবুনিয়া, তুলাতলী, পুর্ব সোনাপাড়ার মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।

মানববন্ধন পরবর্তী সমাবেশে কৃষক সালাম হাওলাদার, দাবি খালের পানি কাউকে ওই প্রভাবশালী মহল ব্যবহার করতে দেয়না। খালের দুই পারের শতশত একর জমির রবিশষ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সেচের পানির অভাবে। পানির সংকটে এবার বোরো ধানের আবাদ করতে পারেনি এখানকার কৃষকরা।

কৃষক সফেজ সিকদার, বামোসে মং, শামসুল হক, বাবুল হাওলাদার, সুন্দর আলী, জাকির হোসেন, হাতেম আলী হাওলাদার, রাজ্জেক তালুকদার, নিজাম তালুকদার, জলিল হাওলাদার, সত্তার হাওলাদার জানান, তারা বোরোর আবাদ করলেও সেচ সংকটে ধান ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে।

একাধিক গ্রামবাসী জানান, এখন কেউ কলসি ভরে পানি নিলেও হুমকি দেয়া হয়। আগে এখানে কত মাছ ধরা হতো। কিন্তু মাছ চাষের নামে খাল দখল করায় এখন গোটা পাঁচ গ্রামের মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। তারা এই খাল দখল মুক্ত ও পানির ন্যায্য হিস্যা দাবি করেন।

ইউপি সদস্য বাদল চাকলাদার জানান, সেখাউ খালে অন্তত পাঁচটি বাঁধ দিয়ে ইউসুফসহ কয়েকজনে জবরদখল করে রেখেছে।

এ ব্যাপারে দখলদার ইউসুফ আলী ও আলতাফ হোসেন এর সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বালিয়াতলী ইউপি চেয়ারম্যান এবিএম হুমায়ুন কবির জানান, সরকারি খাল দখল হয়ে যাওয়ায় গ্রামবাসী সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। এই খাল দখলমুক্ত করতে তিনিও উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খন্দকার রবিউল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, খাল দখলদার যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here