আফগানিস্তানে আশুরা পালনরত শিয়া মুসলমানদের উপর বোমা হামলার সঙ্গে পাকিস্তানি একটি গোষ্ঠী জড়িত, এমনটাই দাবি করেছেন আফগান প্রসিডেন্ট হামিদ কারজাই৷ তিনি জার্মানি থেকে লন্ডন সফর বাতিল করে ফিরে গেছেন কাবুলে৷

আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই তাঁর দেশে মঙ্গলবার বোমা হামলার পেছনে পাকিস্তানের একটি গোষ্ঠীকে দায়ী করেছেন৷ আশুরার দিনে আফগানিস্তানের তিনটি শহরে এই বোমা হামলায় প্রাণ হারায় ৫৯ ব্যক্তি৷ কারজাই বুধবার জানান, পাকিস্তান সরকারের কাছে এই বিষয়টি উত্থাপন করবেন তিনি৷ কারজাই বলেন, পাকিস্তান নির্ভর লস্কর-ই-জানভি বোমা হামলা দায় স্বীকার করেছে৷ আমরা এই বিষয়টি খুব সতর্কতার সঙ্গে তদন্ত করব এবং পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করব৷খবর : ডয়চেলেভে

কারজাইয়ের এই বক্তব্যের পর পাকিস্তানের তরফ থেকে কোন প্রতিক্রিয়া এখনো পাওয়া যায়নি৷ তবে মঙ্গলবার আশুরায় পাকিস্তানে কোন সন্ত্রাসী হামলা না হওয়ায় তালেবানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সেদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিক৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী’র এই ধন্যবাদ জ্ঞাপনকে অনেকে পাকিস্তানের সঙ্গে তালেবানের সম্পর্কে নতুন এক দিক হিসেবে ইঙ্গিত দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা৷ পাকিস্তানের করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. নাইম আহমেদ এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘পাকিস্তানি সেনাদের উপর সাম্প্রতিক ন্যাটো হামলার পর, পাকিস্তান সরকার তালেবানের আরো কাছে পৌঁছেছে”৷

আফগানিস্তান বিষয়ক বন সম্মেলনের মাত্র একদিন পর এমন হামলায় উদ্বিগ্ন আফগান প্রশাসন৷ প্রেসিডেন্ট কারজাই তাই তাঁর ইংল্যান্ড সফর বাতিল করে কাবুলে ফিরে গেছেন৷ এই বিষয়ে তাঁর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আশুরার দিনে কাবুল, মাজার-ই-শরীফ এবং কান্দাহারে সন্ত্রাসী হামলায় কারণে প্রেসিডেন্ট কারজাই তাঁর ব্রিটেন সফর বাতিল করেছেন৷ এসব হামলায় অনেক হতাহত হয়েছে৷

মঙ্গলবারের হামলায় নিহতদের মধ্যে এক মার্কিন নাগরিকও রয়েছে৷ কাবুলের মার্কিন দূতাবাস এই খবর নিশ্চিত করেছে৷ তবে নিহত মার্কিন নাগরিক কোন সরকার কর্মকর্তা ছিলেন না, জানিয়েছেন দূতাবাসের এক কর্মকর্তা৷

এদিকে, বুধবার আফগানিস্তানের দক্ষিণে রাস্তার পাশে পেতে রাখা বোমার বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছে ১৯ বেসামরিক নাগরিক৷ হেলমান্দ প্রদেশের একটি মহাসড়কে এই বিস্ফোরণ ঘটে৷ হেলমান্দের প্রাদেশিক মুখপাত্র দাউদ আহমেদি জানান, নিহতদের মধ্যে পাঁচ নারী এবং শিশু রয়েছে৷

উল্লেখ্য, ২০১৪ সাল নাগাদ আফগানিস্তান ত্যাগ করবে ন্যাটো নেতৃত্বাধীন আইসাফ বাহিনী৷ এরপর আরো দশ বছর বিদেশি সহায়তা পাবে সেদেশ, বন সম্মেলনে এই বিষয়ে প্রতিশ্রুতি আদায়ে সক্ষম হয়েছেন আফগান প্রেসিডেন্ট৷ কিন্তু বিদেশি সেনাবিহীন আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বিভিন্ন মহলে৷ গত দুই দিনের বোমা হামলা এই সংশয় আরো বাড়িয়ে দিয়েছে৷

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here