ড. ইফতেখারুজ্জামানস্টাফ রিপোর্টার :: ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন,রোহিঙ্গা সমস্যা আমাদের বাংলাদেশের সমস্যা, এটা কিন্তু না। এই সমস্যা মিয়ানমারের এবং এটি একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। তাই শুধু ত্রাণকেন্দ্রিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে এ সমস্যার সমাধান করা যাবে না। আন্তর্জাতিকভাবেই এ সমস্যার সমাধান করতে হবে।’

বুধবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে টিআইবির কার্যালয়ে সার্বিক রোহিঙ্গা পরিস্থিতি তুলে ধরতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এই ইস্যু নিয়ে সরকার আন্তর্জাতিকভাবে যে ভূমিকা পালন করেছে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবশ্যই প্রশংসা পাওয়ার দাবিদার। তবে আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে আরো অগ্রণী ভূমিকা পালন করে কূটনৈতিকভাবে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নিতে চাপ প্রয়োগ করতে হবে। তা ছাড়া কূটনৈতিক চাপে এ সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশ সামর্থ্য রাখে।’

তিনি বলেন, ‘মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। অতি অল্প সময়ের মধ্যে সরকার বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ মানবিকতার প্রশংসা করছেন বিশ্ব নেতারা।’

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যু দীর্ঘমেয়াদি হলে জঙ্গি ঝুঁকি বাড়াবে। এ সংকটের সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যোগসাজশের ঝুঁকি রয়েছে।’

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত না করা হলে ক্যাম্পগুলোতে নানাবিদ অপরাধ এবং সহিংসতা বৃদ্ধি পাবে, যা ইতোমধ্যেই লক্ষণীয়। এ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহল কর্তৃক নানাবিধ অপরাধে রোহিঙ্গাদের জড়িত করার ঝুঁকি রয়েছে।’

রোহিঙ্গা সংকট পুরো পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে স্থিতিশীলতা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং নিরাপত্তার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে বলেও মনে করেন ড. ইফতেখারুজ্জামান।

এদিকে টিআইবির গবেষণা বলছে, স্মরণকালের ভয়াবহতম অনুপ্রবেশের ঘটনায় ৫ লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। গত অক্টোবর পর্যন্ত ৩ লাখ ১৩ হাজার জন রোহিঙ্গা নিবন্ধিত হয়েছে।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এ ব্যাপারে সরকারের অবস্থান ইতিবাচক ও সব মহলে প্রশংসা পেয়েছে। অল্প সময়ে সাময়িকভাবে সমস্যা সমাধান করা গেলেও দীর্ঘমেয়াদে তা টেকসই হবে না। ওখানে স্থানীয় জনগণের তুলনায় অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা দ্বিগুণ।

তিনি আরো বলেন, এটা নতুন সমস্যা নয়। আন্তর্জাতিক সমস্যা। আমাদের কূটনীতিকে সুদৃঢ় করতে হবে।

রোহিঙ্গা সংকটে ভারত ও চীনের মতো পরাশক্তিরা দায়ী, এ অভিযোগ করে তিনি আরো বলেন, মিয়ানমারের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বের কারণেই রোহিঙ্গাদের ওপর এ জাতিগত নিধন। এটি গণহত্যা। ভারত ও চীন বাংলাদেশের ভালো বন্ধু। এ দুটি দেশকে বোঝানো দরকার বাংলাদেশের। মিয়ানমারের ওপর প্রয়োজনে সামরিকসহ সকল প্রকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here