ষ্টাফ রিপোর্টার, ইউনাইটেড নিউজ ২৪ঃ আজ পবিত্র আশুরা বা মহররমের ১০ তারিখ। ৬১ হিজরি সালের এই দিনে মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র হজরত ইমাম হুসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ইয়াজিদের সেনাদের হাতে কারবালার ময়দানে শহীদ হন।
পবিত্র আশুরা তাই মুসলিম উম্মাহর জন্য এক তাৎপর্যময় ও শোকাবহ দিন। দিনটি মুসলমানদের কাছে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার দিন।পবিত্র আশুরা উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করছে। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তাঁরা মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেছেন।
দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনুধাবন করে ইসলাম ধর্মাবলম্বী, বিশেষ করে শিয়া সম্প্রদায়ের মুসলমানরা নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। অনেকে রোজাও রাখে। তারা কারবালার সেই ঐতিহাসিক হৃদয়বিদারক ঘটনার স্মরণে আজ প্রতীকী দুলদুল ঘোড়া সাজিয়ে, বুক চাপড়িয়ে, ধারালো ফলার আঘাতে শরীর রক্তাক্ত করে বের করে থাকে তাজিয়া মিছিল। অশ্রুসজল চোখে তারা ‘হায় হোসেন’ ‘হায় হোসেন’ বলে মাতম করে।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তিন দিন ধরে রাজধানীর শিয়া সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ তাদের পবিত্র স্থান হোসেনি দালান ঘিরে পালন করেছে নানা আনুষ্ঠানিকতা। শোকের আবহে কালো পতাকা ওড়ানো হয়েছে। ইমাম হুসাইন (রা.) স্মরণে আয়োজন করা হয়েছে বয়ান, জিকির, মাতম, শিরনি বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যাপক নিরাপত্তা গ্রহণ করেছে। শোক পালনের নামে কোনো অতিরঞ্জন ও বাড়াবাড়ির মাতম যাতে কেউ না করে, সে জন্য অনুরোধও জানানো হয়েছে। পবিত্র আশুরার মিছিল উপলক্ষে কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আদেশ জারি করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
আদেশে বলা হয়েছে, মহররমের তাজিয়া মিছিলে পাইক দলভুক্ত ব্যক্তিরা দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি ইত্যাদি নিয়ে অংশগ্রহণ করে ক্ষেত্র বিশেষে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, যা ধর্মপ্রাণ ও সম্মানিত নগরবাসীর মনে আতঙ্ক ও ভীতি সৃষ্টিসহ জননিরাপত্তার প্রতি হুমকিস্বরূপ। তা ছাড়া পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো হয়, যা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যতাকে ম্লান করে।
দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে। সংবাদপত্রগুলো বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আজ সরকারি ও বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান এবং সংবাদপত্র অফিসগুলোতে ছুটি থাকবে। পবিত্র আশুরা উপলক্ষে মসজিদ, মাদরাসা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ আলোচনা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।