৬ শিক্ষার্থীকে নিয়ে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের ‘পলায়ন’জহিরুল ইসলাম শিবলু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:: লক্ষ্মীপুরে একটি মাদ্রাসার ৬শিশু শিক্ষার্থীকে নিয়ে মো. হোসাইন ওরফে জসিম নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষক পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রবিবার (৬ মার্চ)দিবাগত রাত ২টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

শিশু শিক্ষার্থীরা হলো, রহমানিয়া তালিমুল কুরআন কাওমী মাদ্রাসার হাফেজ বিভাগের ছাত্র মো. রাসেল (১২), আবদুল্লাহ (১০), জোবায়ের (১০), মো. মুরাদ (১০), রবিন (১০) ও মনির হোসেন (১০)।

অভিযুক্ত শিক্ষক নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট এলাকার বাসিন্দা। তিনি লক্ষ্মীপুরের দিঘলী ইউনিয়নের শান্তিরহাট এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি শিক্ষক হোসাইনকে চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে বলেছিলেন। এ কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে হোসাইন এ কাজ করেছেন বলে স্থানীয়দের ধারণা করছেন।

ওই মাদ্রাসার অপর শিক্ষক মনিরুল ইসলাম জানান, তাদের মাদ্রাসায় প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ১৫শিক্ষার্থী মাদ্রাসার হোস্টেলে (আবাসিক) থেকে পড়ালেখা করে। রবিবার রাত দুইটার দিকে আবাসিকে থাকা আট শিক্ষার্থীকে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে পালিয়ে যায় মাদ্রাসা শিক্ষক হোসাইন। এদের মধ্যে দুই শিশু শিক্ষার্থীকে পাওয়া গেলেও ছয় শিশু শিক্ষার্থীর সন্ধান পাওয়া যায়নি।

তিনি আরো জানান, ঘটনার সময় গেটের শব্দ শুনে ঘুম থেকে জেগে উঠেন তিনি। এসময় তিনি চিৎকার করলে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে জড়ো হন। এর আগেই শিক্ষক হোসাইন আট শিক্ষার্থীকে নিয়ে পালিয়ে যান। সোমবার ভোরে দুই শিক্ষার্থীকে রাস্তার পাশে পেয়েছেন দাবি করে একই গ্রামের জসিম উদ্দিন নামে এক অটোরিকশা চালক মাদ্রাসায় নিয়ে এলে এলাকাবাসী তাকে আটক করে।

প্রতিষ্ঠানের সভাপতি গোলাম মোস্তাফা ডিলার জানান, এলাকার মানুষের সহযোগিতায় ২০০৮ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। হাফেজ মো. হোসাইন ওরফে জসিম ছাত্রদের নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।

ওই মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সেক্রেটারি নুর-নবী জানান, শিক্ষক হোসাইন শিক্ষার্থীদের ঠিকমতো পড়াতে পারতো না জানিয়ে তাকে আগামী সাত দিনের মধ্যে চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে বলা হয়েছিল।

ফিরে আসা দুই শিক্ষার্থীর বরাত দিয়ে তিনি আরো জানান, এখানে ভালো খাবার দেয় না অন্য মাদ্রাসায় ভালো খাবার দেবে বলে ফুসলিয়ে ওই শিক্ষক তাদের নিয়ে যান। কিন্তু অটোরিকশায় ওঠার পরই শিশু দু’টি কান্না-কাটি শুরু করলে তাদের ফেলে রেখে চলে যায় ওই শিক্ষক।

দিঘলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইসমাঈল হোসেন জানান, খবর শুনে তিনি ওই মাদ্রাসায় গিয়েছেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটক অটোরিকশা চালক মো. জসিম উদ্দিনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

চন্দ্রগঞ্জ থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মাসুদুর রহমান জানান, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এলাকাবাসী এক অটোরিকশা চালককে আটক করে স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পুলিশে সোপর্দ করেছে। এ ঘটনায় জড়িত মাদ্রাসা শিক্ষককে আটক ও শিশু শিক্ষার্থীদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here