ঢাকা: একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে আল-বদর বাহিনীর নেতা আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের বিরুদ্ধে আনীত সবগুলো অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাব্যুনালের রায়ে তাদের বিরুদ্ধে আনীত ১১টি অভিযোগের মধ্যে ১, ২,  ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ১০ এবং ১১ নম্বর অভিযোগ অর্থাৎ সব অভিযোগই প্রমাণ হয়।

রোববার সকাল ১১টার দিকে বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ  তাদের বিরুদ্ধে রায় পড়া শুরু করে।

সংক্ষিপ্ত রায় ১৫৪ পৃষ্ঠার। এর সারাংশ ৪১ পৃষ্ঠা। এর মধ্যে প্রথম ১৫ পৃষ্ঠা পড়েন বিচারপতি মো. শাহহীনুর ইসলাম। এরপর ১৫ পৃষ্ঠা পড়েন বিচাপতি মজিদুর রহমান। মূল রায় ঘোষণা করছেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

অভিযুক্ত আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীন পলাতক রয়েছেন। আশরাফুজ্জামান বর্তমানে আছেন যুক্তরাষ্ট্রে এবং চৌধুরী মুঈনুদ্দীন যুক্তরাজ্যে।

চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে গত ২৪ জুন ১১টি অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল।

আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের বিরুদ্ধে প্রথম থেকে পঞ্চম অভিযোগে রয়েছে, তাদের নির্দেশে ও অংশগ্রহণে আলবদর সদস্যরা একাত্তরের ১০ ডিসেম্বর রাতে দৈনিক ইত্তেফাকের কার্যনির্বাহী সম্পাদক সিরাজুদ্দীন হোসেনকে, ১১ ডিসেম্বর ভোরে পাকিস্তান প্রেস ইন্টারন্যাশনালের প্রধান প্রতিবেদক সৈয়দ নাজমুল হককে ও দৈনিক পূর্ব দেশের প্রধান প্রতিবেদক এএনএম গোলাম মোস্তফাকে, ১২ ডিসেম্বর দুপুরে বিবিসির সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন আহমেদকে এবং ১৩ ডিসেম্বর শিলালিপির সম্পাদক সেলিনা পারভীনকে অপহরণের পর হত্যা করে। তাদের মধ্যে কেবল সেলিনা পারভীনের লাশ পাওয়া গেছে।

ষষ্ঠ অভিযোগ অনুসারে, একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর সকাল ৮টা থেকে পৌনে ১০টার মধ্যে আশরাফ ও মুঈনের নেতৃত্বে আলবদর সদস্যরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক সিরাজুল হক খান, আবুল খায়ের, ফয়জুল মহিউদ্দিন, অধ্যাপক রাশিদুল হাসান, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য ও চিকিৎসক মো. মর্তুজাকে অপহরণ করে। ১৬ ডিসেম্বরের পর মিরপুরের বধ্যভূমিতে সিরাজুল হক খান ও ফয়জুল মহিউদ্দিনের ছাড়া বাকি ছয়জনের লাশ পাওয়া যায়।

সপ্তম থেকে একাদশ অভিযোগে রয়েছে, একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী ও দৈনিক সংবাদের যুগ্ম-সম্পাদক শহীদুল্লা কায়সারকে অপহরণ করা হয়। তাদের লাশও পাওয়া যায়নি। ১৫ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল মেডিসিন ও কার্ডিওলজির অধ্যাপক মো. ফজলে রাব্বী এবং চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. আলীম চৌধুরীকে অপহরণ করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে তাদের লাশ পাওয়া যায়।

> আশরাফ-মুঈনের বিরুদ্ধে ১১ অভিযোগ

> আশরাফুজ্জামান-মাঈনুদ্দীনের রায় পড়া শুরু

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here