সৈকত দত্ত, শরীয়তপুর প্রতিনিধি :: শরীয়তপুর সদর উপজেলার মাহমুদপুর খান পাড়া দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করার অভিযোগ উঠেছে সুপারের বিরুদ্ধে। বেত্রাঘাতে গুরুতর আহত শিক্ষার্থী শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনার পরথেকে মাদ্রাসার সুপার পলাতক রয়েছে। এলাকাবাসী সুপারের বিচার দাবী করেছেন।
মাহমুদ খান পাড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আনোয়ার হকের বেত্রাঘাতে আহত দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তাছলিমা আক্তার মাহমুদপুর হিন্দু পাড়া গ্রামের কৃষক শাহ আলম খানের মেয়ে। ষষ্ঠ শ্রেনী থেকেই তাছলিমা সুপারের কর্মকান্ড সম্পর্কে অবগত। সুপার আনোয়ার হক সপ্তাহে একবার কা্লশে এসে পাঠ্য পুস্তকের যে কোন জায়গা থেকে পড়া জিজ্ঞাস করে। এতোদিনে লক্ষ্য করা গেছে পড়া না পারলেই সকল ছাত্রীদের মারপিট করে। কিন্তু ছাত্রদের মারপিটের কোন রেকর্ড নাই সুপারের। আজও সেই ঘটনার পুনরায় ঘটেছে।
এলাকাবাসী জানায়, হুজুরে মাঝে মধ্যেই শিক্ষার্থীদের মারপিট করে। একাধিকবার এ বিষয়ে দরবার করেছি। হুজুরের সমস্যা কোথায় তা বুঝতে পারছিনা। হুজুরের মানসিক সমস্যা থাকলে চিকিৎসা করা দরকার।
সুপারের উদ্দেশ্য মূলক নির্যাতনে শিকাড় তাছলিমা আক্তার বলেন, আজ তৃতীয় ক্লাশ ছিল দুপুর ১২টায় “হাদিস” বিষয়। সুপার স্যার এ সপ্তাহে একদিনও ক্লাশে আসে নাই। আজ হঠাৎ হাদিস ক্লাশে এসে আমাদের পড়া জিজ্ঞেস করে। কা্লশে ছেলে-মেয়ে কেউই পড়া পারে নাই। তবুও সুপার হুজুরে মেয়েদের পিটায়। সে নিজের অযোগ্যতা ঢেকে রাখতেই মাঝেমধ্যে ছাত্রীদের পিটায়।
আহত শিক্ষার্থী মা নিলুফা বেগম জানায়, সুপার হুজুর আনোয়ার হকের নির্যাতনের কারণে মেয়ে মাদ্রাসায় যেতে চায় না। মাঝে মধ্যেই হুজুরে মেয়েদের পিটায়। এর আগেও মাদ্রাসার অন্যান্য মেয়েদের পিটিয়েছে। সুপার হুজুরের অত্যাচারে হয়তো মেয়ের পড়া-লেখা আর হবে না। হুজুরে ছাত্রীদের সাথে এ ধরণের আচরণ করে তার বিচারও কেউ করে না।
মাহমুদপুর খান পাড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আনোয়ার হক ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছে। তার সাথে আলাপ করার জন্য অনেক চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে মুঠোফোনে চেষ্টা করা হয়। এক পর্যায়ে মুঠোফোনও বন্ধ রাখেন অভিযুক্ত সুপার আনোয়ার হক।
সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা মোঃ জাকির হোসেন বলেন, আহত শিক্ষার্থীদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করতে বলেন। অভিযুক্ত সুপার আনোয়ার এর পূর্বেও এধরণের ঘটনা একাধিক বার ঘটিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকেই তদন্ত করতে বলবে। আমি তদন্ত করে অভিযুক্ত সুপারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করব।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নলিনী রঞ্জন রায় বলেন, বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানান। আর আমার কাছ থেকে বিস্তারিত জানতে হলে অফিস খোলা সময় আসতে হবে।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ সুমন কুমার পোদ্দার বলেন, জরুরী বিভাগে আহত এক রোগী আসে। জরুরী চিকিৎসা দিয়ে তাকে ভর্তি করে নেই।