ঢাকা : বিরোধী দলের অবরোধের মধ্যে রাজধানীর শাহবাগে ছুড়ে মারা পেট্রল বোমায় যাত্রীবাহী একটি বাসে আগুনে পুড়েছেন চালকসহ ১৯ জন।

অবরোধের তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মৎস্য ভবনের সামনে মিরপুরগামী বিহঙ্গ পরিবহনের যাত্রীভর্তি বাসটিতে পেট্রল বোমা ছোড়া হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

আগ্নিদগ্ধ ১৯ জনকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদের মধ্যে ব্যাংক কর্মকর্তা, সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী, আইনজীবী, সাংবাদিক, পুলিশ সদস্যও রয়েছেন।

হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে দেহের ৫৯ শতাংশ পুড়েছে এমন ব্যক্তিও রয়েছেন, সবচেয়ে কম আহত যিনি তার দেহেরও ১৫ শতাংশ পুড়েছে। আহত চারজনের অবস্থা গুরুতর।

দগ্ধ বাসযাত্রীদের মধ্যে রয়েছেন দুজন ব্যাংক কর্মকর্তা। তারা হলেন রূপালী ব্যাংকের মাসুমা আকতার (২৫)ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের শফিকুল ইসলাম (৩৭)।

সরকারি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন মৃধা (৪০),আইনজীবী খোদেজা নাসরিন (৪৩),পুলিশ কনস্টেবল নুরুন্নবী (৪৫) দগ্ধ হয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র অহিদুর রহমান বাবু (২৫), একুশে টিভির মুক্তখবর অনুষ্ঠানের শিশু সাংবাদিক সুস্মিতা সেন (১৭) ও তার মা গীতা সেন (৪৫) আহতদের মধ্যে রয়েছেন।

আহত অন্যরা হলেন- বাসচালক মো. মাহবুব হোসেন (২৭),তার সহকারী হাফিজুল ইসলাম (২২),কাঁচামাল ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন (৪০),শামীম (২৪), রিয়াদ (২২), নাহিদ (২২), রবিন, আব্দুর রাজ্জাক ও রাহাজুল।

আহত বাকি দুজনের নাম জানা যায়নি। আহতদের বিশেষ ব্যবস্থায় চিকিৎসা দেয়ায় সেখানে সাংবাদিকদেরও ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।

১৯ জনের বাইরেও ওই বাসের আরো কয়েকজন যাত্রী সামান্য আহত হন। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।

রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা মাসুমা সাংবাদিকদের বলেন, বিহঙ্গ পরিবহনের বাসটি মিরপুরের দিকে যাচ্ছিল। মৎস্য ভবনের কাছে বাসটি আসামাত্র পেছনে আগুন দেখতে পান তারা।

বাসটি আগুন নিয়েই রমনা পার্কের অস্তাচল গেইট পর্যন্ত এসে সড়ক বিভাজকের ওপরে উঠে থেমে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে যাত্রীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় বলে শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এম এ জলিল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।

ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে ওই বাসে একটি শক্তিশালী পেট্রোল বোমা ছোড়া হয়েছিল, যা থেকে এই আগুনের ঘটনা ঘটে।

অবরোধে অগ্নিদগ্ধদের দেখতে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনে মহাসচিব ইকবাল আর্সলান হাসপাতালে যান।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দগ্ধ অবস্থায় যাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে অবস্থাদৃষ্টে ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, যদিও দগ্ধ রোগীদের প্রাথমিকভাবে গুরুতর চিহ্নিত করা কঠিন।

বিরোধী দলের অবরোধের মধ্যে সারদেশেই গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে, চলছে বোমা বিস্ফোরণও।

রাজধানীতে গাড়িতে অগ্নিসংযোগে আহত এক টেম্পুচালক বুধবার মধ্যরাতে মারা গেছেন। হাতবোমায় আহত এক নারীও ওই দিন মারা যান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

বুধবার চানখারপুলে হাতবোমায় নয়জন আহত হয়েছেন, টিকাটুলিতে গাড়িতে ছোড়া বোমায় আহত হন এক বাসচালক।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here