স্টাফ রিপোর্টার :: ভ্রমণ কণ্যা হিসেবে পরিচিত নাজমুন নাহার। লাল-সবুজের পতাকা হতে ইতোমধ্যে পৃথিবীর ১০৮টি দেশ তিনি ভ্রমণ শেষ করেছেন। পৃথিবীর পথে পথে ঘুরে বেড়ানো নাজমুন নাহার এরই মধ্যে পেয়েছেন বিভিন্ন সম্মাননা। পেয়েছেন ‘ফ্ল্যাগ গার্ল’ উপাধি। এখন তার স্বপ্ন জাতিসংঘের তালিকাভূক্ত ১৯৩ দেশ ঘুরে দেখা।
সম্প্রতি নাজমুন নাহার ঘুরে এসেছেন জর্জিয়া, আর্মেনিয়া কাজাখস্তান ও কিরঘিজস্তান। অভিজ্ঞতার ঝুলি তার অনেক। যেখানেই গিয়েছেন সেখানেই উড়িয়েছেন বাংলাদেশের পতাকা। তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি, কৃষ্টি, কালচার। নিজেও জেনেছেন সেখানকার এসব বিষয়গুলো।
‘মানুষের কাছে না গেলে, সাথে না মিশলে, তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানা যায় না, বোঝা যায় না। তাই কখনো কখনো চেষ্ট করেছি হোটেলে না থেকে স্থানীয়দের বাড়িতে থাকার। দেশের কালচার জানা ও জানানোর বিষয়টি আমি গুরুত্বের সাথেই দেখি। আমি যখন আমার দেশের বর্ণনা আরেকটি দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতে পারছি, তারা তখন আমার দেশে আশার স্বপ্ন দেখে, প্রতিজ্ঞা করে।’
সোমবার রাতে সুইডেন থেকে ইউনাইটেড নিউজকে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন- পৃথিবী ঘুরে বেড়ানো বাংলাদেশের নাজমুন নাহার।
ইউনাইটেড নিউজকে জানান, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরের মধ্যে জাতিসংঘের তালিকাভূক্ত ১৯৩টি দেশ ভ্রমনের বিজয় উদযাপন করতে চান তিনি। আগামী এক মাসের মধ্যে আমার বিশ্ব ভ্রমনের তালিকায় যুক্ত হবে ১১৫টি দেশের নাম। তিনি বলেন- ‘আমি শুধু পৃথিবী ঘুরছি তা নয়, আমি পৃথিবীর সবগুলো মানুষের মধ্যে একটি বার্তা ছড়িয়ে দিতে চাই, সবাইকে সবার ভালো চিন্তা করতে হবে।’
নাজমুন নাহারের সাবলিল কথা, ‘মহাকাশ থেকে পৃথিবীকে একটি ডটেরমত দেখায়। পৃথিবীর সবাই আমরা একই সূর্য, চাঁদ দেখি। আমাদের অনুভূতিও এক, চিন্তাও এক। শুন্য হাতে দুনিয়াতে এসেছি, আবার শুন্য হাতেই চলে যাবো ।তাই সমাজের জন্য কিছু করে রেখে যেতে চাই, যা পরবর্তী প্রজন্ম এগুলো অনুধাবন করবে-শিখবে। এ ধরণের চিন্তা সবার মধ্যে কাজ করলে বিশ্ব হবে এক ও শান্তির’
নাজমুন নাহার তরুনদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তরুণ বয়সের উদ্যমতাকে কাজে লাগাতে হবে, এ সময়টাকে নষ্ট করা যাবে না।’
২০০০ সালে ভারতের ভূপালে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভেঞ্চার কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার মধ্যে দিয়ে পৃথিবী দেখার শুরু হয় নাজমুন নাহারের।২০১৮ সালের ১ জুন তিনি শততম দেশ ভ্রমণের করেন আফ্রিকার জিম্বাবুয়ে পরিভ্রমণের মধ্য দিয়ে।
খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের ভ্রমণ পথিকৃৎ হয়ে উঠা নাজমুন নাহারের জন্ম ১৯৭৯ সালের ১২ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার গঙ্গাপুর গ্রামে। ব্যবসায়ী বাবা মোহাম্মদ আমিন ২০১০ সালে পৃথিবী ছেড়ে গেছেন। মা তাহেরা আমিন। তিন ভাই, পাঁচ বোনের মধ্যে নাজমুন নাহার সবার ছোট। দালাল বাজার নবীন কিশোর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৯৪ সালে স্টার মার্কসহ এসএসসি এবং লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ থেকে ১৯৯৬ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে এইচএসসি পাস করেন তিনি। পরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর কিছুদিন সাংবাদিকতা করেন। ২০০৬ সালে শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনার জন্য তিনি সুইডেন যান। সেখানে লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এশিয়ান স্টাডিজ বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।বর্তমানে সুইডেনে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে খন্ডকালীন চাকুরি করছেন।