কক্সবাজার:: বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশনের আয়োজনে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শরণার্থী শিশুদের অংশগ্রহণে শেষ হলো তিনদিন ব্যাপী প্রতিভা অন্বেষণ ও মিউজিক থেরাপি কর্মসূচি। গত ৮ ডিসেম্বর শুরু হওয়া এ কর্মসূচি ১০ ডিসেম্বর রোববার সম্পন্ন হয়েছে।
কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং, হিন্দু শরণার্থী ক্যাম্প, বালুখালি, ময়নার ঘোনা, তাসনিমার ঘোনা, ঘুমধুম শরণার্থী ক্যাম্পের রোহিঙ্গা শিশুদের নিয়ে এই মিউজিক থেরাপি কর্মসূচী পরিচালিত হয়।
মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা শিশুরা তাদের নিজস্ব ভাষায় গান ও বার্মিজ ভাষায় কাব্যিয়া পরিবেশন করে। শিশুদের পরিবেশিত কিছু গানে তাদের দুঃখ-কষ্ট, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতন, নিপীড়ন, ধর্ষণ, লুটসহ জাতিগত নিপীড়নের কথাও ফুটে ওঠেছে।
এ সময় অনেক রোহিঙ্গা জনগণকে চোখের জলও ফেলতে দেখা যায়। এ ছাড়া তারা রোহিঙ্গা ভাষার জনপ্রিয় ও মজার বেশ কিছু গান, কাব্যিয়া পরিবেশন করে। এসব গান শুনে উপস্থিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী দুঃখকষ্ট ভুলে কিছু সময়ের জন্য হলেও আনন্দে মেতে উঠে।
তিন দিনের এ কর্মসূচিতে ১২টি স্থানে পরিচালিত অনুষ্ঠানে ১০ হাজারের অধিক রোহিঙ্গা শিশু ও নারী পুরুষ অংশগ্রহণ করে।
রোববারের কর্মসূচিতে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান উপস্থিত হয়ে রোহিঙ্গা শিশুদের পরিবেশিত গান, কাব্যিয়া উপভোগ করেন।
এ সময় তিনি শিশুদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন এবং শিশুদের মানসিক বিকাশে শিল্পকলা একাডেমির ব্যতিক্রমী এ আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক এবং পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা লিয়াকত আলী লাকীর পরিকল্পনা ও পরিচালনায় প্রতিভা অন্বেষণ ও মিউজিক থেরাপি কর্মসূচি সমন্বয় করেছেন আবদুল্লাহ বিপ্লব ও হাবিব তাড়াশি।
কক্সবাজারের স্থানীয় সাংস্কৃতিক কর্মীদের একটি দল এই কর্মসূচীতে সহায়তা করছে এবং স্থানীয় সমন্বয়ক ও প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন জেলা কালচারাল অফিসার সৈয়দ মুহম্মদ আয়াজ মাবুদ।
উল্লেখ্য, গত অক্টোবর মাসেও রোহিঙ্গা অনাথ শিশুদের মানসিক শক্তি তৈরীতে ড্রামা থেরাপি কর্মসূচি পরিচালনা করা হয়। ২২টি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১৫হাজার রোহিঙ্গা শিশুদের মাঝে ড্রামা থেরাপি কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি