বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেতানসেন আলম, বগুড়া প্রতিনিধি :: রোগীর লোকদের মারপিট করার ঘটনায় ইন্টার্নী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ায় কর্মবিরতী করেছে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নী চিকিৎকরা। এবিষয়ে সমাধানের জন্য শুক্রবার বিকালে জরুরী সভা ডাকলেও কোন সাড়া দেয়নি তারা।

শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মাসুদ আহসান বলেন, আগে কিছু না জানিয়েই ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কাজে যোগদান থেকে বিরত রয়েছেন। তাদের অনুপস্থিতিতে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা সঠিকভাবে হচ্ছে কি না দেখান জন্য দুটি মনিটরিং টিম গঠর করা হয়েছে।
হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. নির্মলেন্দু চৌধুরী  জানান, শুক্রবার বিকেলে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ডেকে কাজে যোগদানের কথা বলা হলেও তারা কোন উত্তর দেয়নি। শনিবার সকাল ৯টায় আবারো সভা আহ্বান করা হয়েছে।

শুক্রবার সকালে হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায় চিকিৎসকরা কাজ করলেও শিক্ষানবিশ চিকৎসকরা কাজে যোগ দেননি। বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসকরা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন।

সার্জারি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার খালিদ আব্বাস খান বলেন, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সকাল থেকেই হাসপাতালে আসেননি। তবে তাদের অনুপস্থিতিতে চিকিৎসার কাজে কোনো ব্যাঘাত ঘটছে না। আমরা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি।

সিরাজগঞ্জ সদর থেকে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আলাউদ্দিন সরকার নামে এক রোগীর ছেলে রউফ সরকার গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মারধরের শিকার হন।

তার অভিযোগ, তিনি ফ্যান বন্ধ করার জন্যি সুইচ খুঁজে না পেয়ে দায়িত্বরত ইন্টার্ন চিকিৎসককে জিজ্ঞেস করলে তিনি রেগে যান। এরপর আরেকজন শিক্ষানবিশ চিকিৎসক এসে তাকে মারধর করেন এবং অন্য একটি কক্ষে নিয়ে কান ধরে উঠবস করান। ওই ঘটনার পর শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা করলেও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়।

পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। ওই কমিটি প্রতিবেদনে চার শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে।

এই সুপারিশের প্রেক্ষাপটে ওই চার শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের ইন্টার্নশিপ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মেয়াদ শেষে এই চার শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে চারটি ভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের ইন্টার্নশিপ শেষ করতে হবে।

সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে আল মামুনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে,  নূরজাহান বিনতে ইসলাম নাজকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, মো. আশিকুজ্জামান আসিফকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং  মো. কুতুবউদ্দিনকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ শেষ করতে হবে।

ভবিষ্যতে এই ধরনের কাজ করলে তাদের পেশাগত সনদ বাতিল করা হবে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here