আরিফ চৌধুরী শুভ :: একুশ শতকের গ্রন্থাগার এখন আর কেবল জ্ঞানের সংগ্রহশালাই নয়, বিশ্ববিস্তৃৃত জ্ঞান ভান্ডারে প্রবেশের চাবিকাঠিও বটে। গ্রন্থাগারের মাধ্যমে নিজেদের জ্ঞানকে শুধু সমবৃদ্ধ করাই নয়, নৈতিক আদর্শ গঠন, সৃজনশীলতার জাগরণ আর ব্যক্তিত্ব বিকাশের মাধ্যমে দেশ ও জাতিকে উন্নতির জন্যে গ্রন্থাগারের প্রয়োজনীয়তা বলাবাহুল্য। অথচ সাড়ে ১৬ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার এ দেশে বই পড়ার জন্য মাথাপিছু সরকারি বরাদ্দ মাত্র ৬০ পয়সা। অবাক হলেও এটাই সত্য কথা। যদি জনসংখ্যা ১৭ কোটি হয়, তাহলে মাথাপিছু বরাদ্দ আরো ১০ পয়সা কমে যাবে।
দেশের ৭১টি গণগ্রন্থাগারের জন্য সরকারের বার্ষিক যে বরাদ্দ মাত্র ১ কোটি টাকা, সে হিসাবেই প্রতিটি গ্রন্থাগারের জন্যে গড় বাজেট পড়ে ১৪০৮৪৫.০৭ টাকা মাত্র। যদিও দেশের ৪৬তম বাজেটের আকার ছিল ৪ লাখ ২শত ৬৬ কোটি টাকা। শুধু শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতের জন্যে সবোর্চ্চ বাজেট ছিল ৬৫, ৪৪৪ কোটি টাকা। কিন্তু এত বড় বাজেট থেকে মাত্র মাত্র ৬০ পয়সার বরাদ্ধ দিয়ে বই পড়ায় মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার কাজটি কঠিন নয় কি?
তবুও থেমে নেই বই পড়া। বইপ্রেমিরা কারো করুণায় বসে থাকেন না। লেখক যেমন মনের খোরাক যোগাতে বই লেখে যাচ্ছেন সেচ্চায়, তেমনি পাঠক নিজেকে জানার জন্যে হোক আর মনের আনন্দের জন্যে হোক, বই না পড়লে পেটের ভাত হজম করতে পারেন না। পাঠকই এক সময় প্রয়োজনের তগিদে গড়ে তোলেন গ্রন্থাগার। নিজেই শুধু বই পড়েন না, অন্যের পড়ার জন্যে গড়েও তুলেন পাঠাগার। ফলে পাঠক যেমন বাড়ে, তেমনি পড়ার আত্মাও বাড়ে অন্য পাঠকের।
পাঠক, লেখক ও সেচ্চাসেবী কয়েকটি সংগঠন পাঠাগার গড়া ও বই পড়াকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সরকারের পাশাপাশি। নানা অভিযোগের দায় নিয়েও তারা সেচ্চায় করে যাচ্ছে পাঠাগার গড়ার কাজ। রাষ্ট্রের অট্ট্রালিকা বাড়ে আকাশচুম্বি, মাথার উপর রাস্তা বাড়ে দৃষ্টিসীমার বাইরে, জিডিপি বাড়ে, বাজেট বাড়ে যোজন যোজন গুণে, কিন্তু বাড়ে না বই পড়ার জন্যে মাথাপিছু রাষ্ট্রীয় খরচ। বই পড়ার জন্যে ৪৬ বছরে মাথাপিছু বাজেট মাত্র ৬০ পয়সা। দু:খটা কে করবে কার কাছে? কিভাবে উন্নত হবে সরকারি গ্রন্থাগারগুলোর মান? কে পাশে দাঁড়াবে বেসরকারি প্রায় ২ হাজার পাঠাগারের পাশে। অথচ এই বই ই মানুষকে অজ্ঞতার অন্ধকার থেকে দূরে রাখার একমাত্র পথ। বই ই আমাদের দেখিয়েছে স্বাধীনতা সূর্যের রং। বই ই দিয়েছে আমাদের ভাষার বর্ণমালা। আমরা সেই বর্ণে ডাকছি মা।
যে সকল বেসরকারি উদ্যোগ এখনো দৃশ্যমান গ্রন্থাগার গড়া ও বই পড়া কেন্দ্রিক, তাদের সংখ্যাটাও হাতের আঙ্গুলের মতো। এই কাজে আগ্রহের চেয়ে আর্থিক দৈন্যতাই বেশি দূর সফল হতে দেয় না সেচ্চাসেবী সংগঠনগুলোকে। তবুও তারা যেটুকু করছে, তা না থাকলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারতো। উদার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত সবার।
ডিজিটালাইজেশনের যুগে মানুষের আগ্রহ কোন দিকে বেশি, পাঠক কিভাবে বইকে কাছে পেতে চায়, সে ভাবেই গ্রন্থাগারগুলো আধুনিকায়ন করার এখনই সময়। কিন্তু আমরা কি তা এতদিনেও করতে পেরেছি? বই পড়া ও গ্রন্থাগার গড়ায় ব্যক্তি উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করছি রাষ্ট্রের ব্যর্থতার কারণে। যেখানে একপাওয়ালা রাষ্ট্র হাঁটা শিখতে শিখতেই সমস্যার ভারে নুয়ে পড়ে, সেখান থেকেই ব্যক্তি উদ্যোগে বহু গ্রন্থাগারের হাল ধরেছে উদ্যোক্তারা। তাদের চেষ্টাকে স্বাগত জানানো উচিত সরকারকেও। তাদের সাথে নিয়ে গ্রন্থাগারের উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা করা যেতে পারে।
এ বছরে আমাদের জন্যে একটি শুভ সংবাদ দিল বর্তমান সরকার। এ সরকারের উদ্যোগেই প্রতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস হিসাবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রথম বারের মতো ৫ ফেব্রুয়ারি পালিতও হয়েছে গ্রন্থাগার দিবসটি। ইংল্যান্ডে ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে ‘গণগ্রন্থাগার আইন’ আইন পাশ হবার পরে এই উপমহাদেশে প্রথম পাঠাগার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু হতে শুরু করেছে। পাঠাগার আইন পাশ হবার ১৬৮ বছর পরে এসে আমরা এই প্রথম পাঠাগার দিবস পালন করলাম। পাঠক ও পাঠাগার প্রেমিরাও এখন জেনেছে বই ও পাঠাগারের প্রতি সরকারের আন্তরিকতা জেগেছে। এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই সকল পাঠকদের পক্ষ থেকে। এই দিবস পালনের মাধ্যমে গ্রন্থাগার নিয়ে যারা দীর্ঘদিন কাজ করে যাচ্ছে, তাদের উৎসাহ বোধ জাগ্রত হবে।
‘বিশ্ব গ্রন্থ ও গ্রন্থস্বত্ব দিবস’ হলো ২৩ এপ্রিল। ১৯৯৫ সালে ইউনেস্কো এই দিনকে ‘বিশ্ব গ্রন্থ ও গ্রন্থস্বত্ব দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করে। এই দিনকে ‘বিশ্ব গ্রন্থ ও গ্রন্থস্বত্ব দিবস’ নির্বাচনের অন্যতম কারণ হলো বিশ্ব সাহিত্যের দুই মহান ব্যক্তি শেক্সপিয়র ও সারভাস্তেস এই দিনেই জন্মগ্রহণ করেছেন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে বাংলাদেশেও ২০০০ সাল থেকে দিবসটি পালন করা হচ্ছে। আশা করি এবারও দিবসটি ঘটা করে পালন করার উদ্যোগ নেবে সরকার।
‘জাতীয় পাঠাগার আন্দোলন-জাপাআ’ সারাদেশের বেসরকারি গ্রন্থাগারগুলোকে একটি ছাতার নিচে নিয়ে পাঠাগারের মানোন্নয়ন বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রতিটি গ্রামে অন্ত:ত একটি করে পাঠাগার গড়ার কাজ করে যাচ্ছে সঙ্গবদ্ধ হয়ে। একঝাঁক তারুণ্যের মনে শৈশব থেকে পাঠাগার গড়ার যে দীপ্ত স্বপ্ন, সেই স্বপ্নের সারথী হতে রাষ্ট্র যদি এগিয়ে আসে, তাহলে ‘বই পড়ি পাঠাগার গড়ি’ শ্লোগানে এই সংগঠনটি সব গ্রামে পাঠাগার গড়ার কাজটি আরো দ্রুত করতে পারবে। অর্ধশতাধিক পাঠাগার এরই মধ্যে সারাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জাপাআ’র সদস্যদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়। গ্রন্থাগার দিবস তাদের নতুন ভাবনা আর কর্মপরিকল্পনার নবজাগরণ ঘটবে এটা নিশ্চিত। তবে গণগ্রন্থাগারগুলোর জন্যে সরকারের যে বাজেট ও কর্মপরিকল্পনার কচ্চপগতি, তা দিয়ে মানুষের বই পড়ার আকাঙ্ক্ষা আশানুরূপ পূরণ হবে না।
গ্রন্থাগারগুলোর মানোন্নয়নের জন্যে শুধু গ্রন্থাগারের উপরই গবেষণা করা উচিত। লাইব্রেরি সাইন্সের উপর আরো বেশি পেশাদারিত্ব অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করা উচিত। এ বিষয়ের উপর পিএইচডি ডিগ্রিতে উৎসাহিত করা উচিত শিক্ষার্থীদের। প্রতিটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনে লাইব্রেরি সাইন্সে অন্ত:ত একটি করে বিষয় অন্তর্ভূক্ত করা উচিত, যেন সব শিক্ষার্থী জীবনের কোন না কোন পর্যায়ে লাইব্রেরি বৃত্তান্ত সম্পর্কে অন্ত:ত অজ্ঞ না থাকে। পৃথিবীর প্রথম লাইব্রেরিটিও ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এটিও অন্ত:ত কতজনে জানেন?
পৃথিবীর প্রথম লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রোমে। ১৬০২ খ্রিস্টাব্দে আসিরীয় রাজ্যে পৃথিবীর সর্বপ্রথম লাইব্রেরি/পাঠাগার ‘ভ্যাটিকান লাইব্রেরি’ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পৃথিবীর দ্বিতীয় লাইব্রেরি ‘ব্রিটিশ মিউজিয়াম লাইব্রেরি’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৭৫৩ খ্রিস্টাব্দে. এভাবে মিসর, ব্যাবিলন, চীন, তিব্বত ও ভারতে পর্যায়ক্রমে গ্রন্থাগার গড়ে উঠেছে।
অ্যাসিরিয় সভ্যতা থেকে শুরু করে চীন, গ্রীক, রোম, কনস্টান্টিনোপল, বাগদাদসহ সর্বত্র বিশাল বিশাল গ্রস্থাগারের অস্থিত্ব ছিল। মধ্যযুগে রাজকীয় মহাফেজখানায় বা গ্রন্থাগারে দলিল-দস্তাবেজ ও দুর্লভ তথ্য সংরক্ষণ করা হতো। এভাবে জ্ঞানীগুণী মানুষের ঐকান্তিক উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় পাঠাগার স্থাপিত হয়েছে। এবং এই প্রক্রিয়া চলমান।
জ্ঞান অর্জনে উন্মুক্ত পাঠাগার প্রবর্তনের ইতিহাস খুব একটা বেশি দিনের নয়। আগে পাঠাগার ছিল রাজা-বাদশাহ, জমিদার ও উচ্চবিত্ত কেন্দ্রিক। কিন্তু জ্ঞান পিপাসা মেটানোর জন্যে বেসরকারি পাঠাগার বৃদ্ধির ফলে সাধারণের জ্ঞান পিপাসা মেটানো অধিকতর বৃদ্ধি ও সহজ হয়েছে। বাংলা ভাষার আদি নিদর্শন চর্যাপদ আবিষ্কার হয়েছে ১৯০৭ সালে নেপালের রাজকীয় লাইব্রেরিতে।
উপমহাদেশে লাইব্রেরি/পাঠাগার/গ্রন্থাগারের ইতিহাস হতে জানা যায় যে, ভারতবর্ষে কলকাতায় ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে গভর্নর জেনারেল এর সহায়তায় ইংরেজরা সর্বপ্রথম ‘কলিকাতা পাবলিক লাইব্রেরি’ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে বিশেষ ব্যক্তিদের উদ্যোগে ইংল্যান্ডে ‘গণগ্রন্থাগার আইন’ পাশ হবার পর জনগণের করের টাকায় পাঠাগার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইংল্যান্ডে ‘গণগ্রন্থাগার আইন’ আইন পাশ হবার পরে এই উপমহাদেশে প্রথম পাঠাগার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু হয়। ‘গণগ্রন্থাগার আইন’ আইন পাশ হবার পরে ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে মেদিনিপুর জেলায় ‘রাজা নারায়ণ বসু সমঋতি পাঠাগার’ নামে প্রথম পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ১০০ থেকে ১৬৮ বছরের পুরনো লাইব্রেরির সংখ্যা ৩৪টি। এগুলো গড়ে উঠেছে ১৮৩১ সাল থেকে ১৯১৪ সালের মধ্যে। ১৯২৪ সালে বেলগাঁও শহরে অনুষ্ঠিত ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের ৩৯তম অধিবেশনে গ্রন্থাগার নিয়ে ফলপ্রসু আলোচনার মাধ্যমে দেশের সর্বত্র পাঠাগার প্রতিষ্ঠার পস্তাব গৃহীত হয়েছে। সর্বপ্রথম ১৯২৪ সালে ভারতে গ্রন্থাগার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯২৫ সালে ‘নিখিল বঙ্গ গ্রন্থাগার সমিতি’ নামে সর্বপ্রথম একটি পাঠাগার সমিতির আত্মপ্রকাশও ঘটে।
বাংলাদেশে বিখ্যাত, প্রাচীন ও ঐতিহ্যসমবৃদ্ধ বড় বড় কয়েকটি গ্রন্থাগার হলো এশিয়াটিক সোসাইটি গ্রন্থাগার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার, কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি গ্রন্থাগার, বাংলা একাডেমি লাইব্রেরি, বরেন্দ্র মিউজিয়াম লাইব্রেরি, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ইত্যাদি।
পাঠাগারের সঠিক সংখ্যাটা কি জানি?
দেশে পাঠাগারের সঠিক পরিসংখ্যান শুধু সরকার কেন, কোন সংস্থার কাছেই নাই। জাতীয় ভাবে এমন পরিসংখ্যান করার উদ্যোগও কখনো নেওয়া হয়নি। তবে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র থেকে প্রকাশিত সর্বশেষ প্রকাশন ‘বেসরকারি গ্রন্থাগার নির্দেশিকা’ অনুযায়ী (১৯৯৫-২০১৪ সাল পর্যন্ত) বেসরকারি পাঠাগারের সংখ্যা ১ হাজার ৭০টি। বাংলাদেশ বেসরকারি গণগ্রন্থাগার সমিতির তথ্য অনুসারে দেশে পাঠাগারের সংখ্যা প্রায় ২০০০ অধিক।
দেশে সরকারি ও বেসরকারি গ্রন্থাগারগুলোকে দেখভালের জন্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান আছে মাত্র ২টি। অথচ সরকারি গ্রন্থাগারই রয়েছে ৭১টি। গ্রন্থাগার অধিদপ্তর দেশের ৭১টি গ্রন্থাগারকে দেখভাল করেই ক্লান্ত। তাই বেসরকারি গ্রন্থাগারগুলোকে দেখভাল করে একমাত্র জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র।
জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র বেসরকারি গ্রন্থাগারসমূহকে আর্থিক অনুদান, বই প্রদান, গ্রস্থাগারের কর্মকতা-কর্মচারিদের প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে। জেলা পর্যায়ের গ্রন্থাগার, উপজেলা পর্যায়ের গ্রন্থাগার এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের গ্রন্থাগার এই তিন ক্যাটাগরিতে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র অনুদান প্রদান করে থাকে।
সারাদেশের গ্রন্থাগারগুলোকে সক্ষমতাশীল করার জন্যে সর্বপ্রথম ১৯৯৮ সালে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের নেতৃত্বে জাতীয় গ্রন্থনীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। কিন্তু এই নীতির বাস্তবায়ন আলোর মুখ দেখেনি।
শুধু তাই না, সরকারি গ্রন্থাগারগুলোর বই কেনার প্রক্রিয়াতেও জটিলতার পাশাপাশি সমস্যার শেষ নেই। সব সময় কম টাকায় বেশি বেশি বই কেনার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এসব বই কতটা কাজের সেটা নিয়ে ভাবা হয় না। ফলে প্রতিযোগিতা চলে বই বিক্রির, কিন্তু মানের না। পাঠক হারিয়ে যায়। নিরানন্দ বোধে পাঠস্থির কতক্ষণ?
বেশির ভাগ গ্রন্থাগার ওপরে ফিটফাট, ভেতরে অন্ত:সারশূন্য। আমাদের স্কুল পর্যায়ের গ্রন্থাগার উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। পাঠাগার ঘন্টা চালু করতে হবে। সে সাথে বেসরকারি গ্রন্থাগারগুলোতে যে অনুদান প্রতি বছর সরকার জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের মাধ্যমে দেয় তা দিয়ে যেমন বেসরকারি পাঠাগারগুলো সঠিক ভাবে দাঁড়াতে পারে না, তেমনি সেখান থেকেও বেশিরভাগ অনুদানই চলে যায় নাম সরর্বস্ত্র পাঠাগারগুলোতে।
লেখক: উদ্যোক্তা ও সংগঠক, নো ভ্যাট অন এডুকেশন আন্দোলন এবং প্রতিষ্ঠাতা, জাতীয় পাঠাগার আন্দোলন। arifcenstamford@hotmail.com