প্রাইভেট না পড়ায় ছাত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগখোরশেদ আলম বাবুল, শরীয়তপুর প্রতিনিধি :: শরীয়তপুরে ভেদরগঞ্জ উপজেলার দুলারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী প্রাইভেট না পাড়ায় নির্যাতনের শিকার হয়েছে। বিদ্যালয়ের ইংরেজী বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক পরিতোষ শিকদারের বিরুদ্ধে এ নির্যাতনে অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় এলাকাবাসী সহ যুব সমাজ ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফুঁসে উঠেছে। ঘটনার পর থেকে ওই শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। অন্যান্য শিক্ষার্থী উপস্থিতিও কমে গেছে।

গত বৃহস্পতিবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান চৌধুরী অভিযুক্ত শিক্ষকের পক্ষে অবস্থান করে বিদ্যালয়ে গিয়ে নির্যাতনে শিকার ছাত্রীকে টিসি দেয়ার ভয় দেখিয়েছেন বলেও জানান স্থানীরা। ঘটনার পরবর্তী প্রধান শিক্ষক মো. হাসান বারী ৮ম শ্রেণীর পাঠদান থেকে অভিযুক্ত শিক্ষককে অপসারন করেছেন।

বিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা জানায়, গত ২৪ মে বুধবার দুলার উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীর ইংরেজী ক্লাশে পরিতোষ শিকদার ইংরেজী প্যাসেস পড়ায়। তখন ওই ক্লাশের মেধাবী ছাত্রী সিদ্দিকা স্যারের পড়া বুঝতে পারেনি। তখন পরিতোষ স্যার ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ছাত্রীর উপর নির্যাতন চালায়।

এ সময় স্যারের হাতে থাকা কলম দিয়ে সিদ্দিকার কপালেও খোঁচা মারে। এতে সিদ্দিকা আহত হয় এবং মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। সে থেকে সিদ্দিকা আর বিদ্যালয়ে আসেনি।

বিদ্যালয়ের কয়েক শিক্ষার্থী কিছু বলার মানসিকতা নিয়ে প্রতিবেদককে জিজ্ঞেস করে আমরা কিছু বললে স্যার আমাদের বিদ্যালয় থেকে বের করে দিবে না তো? নির্ভয় পেয়ে বলেন, স্যার পরিতোষ শিকদার ক্লাশে ভালো ভাবে পড়ায় না। স্যারের পড়া বুঝতে না পারলে ধমকায় আর বলে প্রাইভেট না পড়লে ক্লাশে পড়া বুঝা যায় না। ওই দিন সিদ্দিকা স্যারের পড়া বুঝতে না পেরে পুনরায় পড়াতে বললেই স্যার ক্ষেপে সিদ্দিকাকে কলম দিয়ে কপালে আঘাত করে। সেই থেকে সিদ্দিকা আর বিদ্যালয়ে আসেনি।

অভিযুক্ত শিক্ষক পরিতোষ শিকদার বলেন, গত ২৪ মে ষষ্ঠ ঘন্টায় অষ্টম শ্রেনীর ‘খ’ শাখার ক্লাশে যাই। শিক্ষার্থীরা বলে স্যার আজ প্রচন্ড গরম তাই ক্লাশ করবো না। তখন আমি বলি ‘তাহলে তোমরা বস আমি পড়াই’। আমি ইংরেজী প্রথম পত্রের একটা টপিকের প্রথম অর্ধেক পড়াইয়া দ্বিতীয়ার্ধে না যেতেই একটা মেয়ে দাড়াইয়া বলে, ‘স্যার আপনি কি পড়ান কিছুই বুঝিনা। আপনি নিয়মিত ক্লাশে আসেন না, পড়া নেন না।’ তখন নিজের রাগ কন্ট্রল না করতে পেরে ক্লাশ থেকে বেরিয়ে আসি। বিষয়টি প্রধান শিক্ষককে বলি। এ ছাড়া ছাত্রীর গায়ে আঘাহ বা খোচা মারা এসব কিছুই ঘটে নাই।

প্রধান শিক্ষক মো. হাসানুল বারী বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে অষ্টম শ্রেনীর পাঠদান থেকে পরিতোষ স্যারকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। কোন ছাত্রীকে টিসি দিব তা আমার সিদ্ধান্ত। কারো কথায় আমি তা করবো কেন। স্থানীয় যুব সমাজ আমার কাছে অভিযোগ করে। অভিযোগ প্রমানিত হলে সঠিক বিচারের আশ্তস্ত করেছি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মনিরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ফেসবুকে স্ট্যাটাচ দেখে বিদ্যালয়ে যাই। নির্যাতিতা শিক্ষার্থী ও তার পিতাকে ডেকে পাঠাই। শিক্ষার্থী না আসায় প্রকৃত ঘটনা জানতে পারিনি। আপনারা যদি এমন কিছু উৎঘাটন করতে পারেন আর সাক্ষি প্রমান থাকে তাহলে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here