ইউনাইটেড নিউজ ডেস্ক: বাংলায় আবার ‘সাহেব বিবি গোলাম ’৷ কোনও রিমেক নয়৷ মৌলিক গল্প৷ খুন , স্কিন , রক্ত , প্যাশন — সব মিলিয়ে প্রতিম দাশগুন্ত র আগামী ছবি৷ জমজমাট থ্রিলার৷ যেখানে একসঙ্গে অঞ্জন দত্ত , স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় , ঋত্বিক চক্রবর্তী ৷ লিখছেন শতরূপা বসু

খুন৷ স্কিন৷ রক্তপাত৷ প্যাশন৷ প্রেম৷ এবং টলিউডে আরেক সাংঘাতিক কাস্টিং ক্যু !!!এই প্রথম , একসঙ্গে অঞ্জন দত্ত আর স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় ! সঙ্গে আরেক বোমা – ঋত্বিক চক্রবর্তী৷ এবং পার্নো মিত্র৷ ছবির নাম ‘সাহেব বিবি গোলাম ’৷ আর এ কাজটি যিনি করে ফেলেছেন তিনি – প্রতিম দাশগুন্ত৷ বা , প্রতিম ডি গুন্তা৷

পার্ক স্ট্রিটের ঠিক যে জায়গায় বসে পরিচালক গল্পটা বলছিলেন , তার থেকে ঢিল -মারা দূরত্বেই খুনটা হয়েছে৷ এক অ্যাংলো -ইন্ডিয়ান সাহেব খুন করেছেন৷ সাহেব গায়ক৷ বার -এ নিয়মিত গান গান৷ শীতের কলকাতার কোনও এক রাতে তিনি যথারীতি গান গাইছিলেন৷ ইন্টারল্যুড -এর সময় উঠে বাথরুমে যান৷ খুন করেন৷ ফিরে এসে আবার গান গাইতে শুরু করেন৷ এই অবধি বলে নবীন পরিচালক থামলেন৷ মিটিমিটি দেখছেন উল্টোদিকে বসা মানুষটির হাবভাব৷ সে মানুষটির মুখে উত্সুক ‘তার পর ?’ গোছের ভাব জাগা -মাত্র মৃদু হাসি ছড়িয়ে গেল পরিচালকের মুখে৷ যার বাংলা মানে – গিলছে ! মাছ , থুড়ি দর্শক টোপ গিলছে ! তবে নবীন হলেও গল্পটা যে তিনি ভালোই বলতে পারেন সেটা তাঁর প্রথম ছবি ‘পাঁচ অধ্যায় ’ই বলে দিয়েছে৷ সে বাণিজ্যিকভাবে যাই ব্যবসা করুক সে ছবি৷ প্রথমে ছবির নাম রেখেছিলেন , ‘জিমি জয়া জাভেদ ’৷ কিন্ত্ত লোকজন বলেছিল , কেমন যেন ভয়ঙ্কর আঁশটে রকমের বাণিজ্যিক গন্ধ ছড়াচ্ছে৷ অনেকটা যেন ‘অমর আকবর অ্যান্টনি ’৷ তাই পাল্টে নাম রেখেছেন ‘সাহেব বিবি গোলাম ’৷ কলকাতায় এক ‘সাহেব ’, এক ‘বিবি ’ আর এক ‘গোলাম ’-এর গল্প৷ আদতে , পঞ্চাশোর্ধ্ব এক অ্যাংলো ইন্ডিয়ান , এক দক্ষিণ কলকাতার গৃহবধূ আর পার্ক সার্কাসের এক অত্যন্ত গরিব মুসলমান ট্যাক্সি চালকের গল্প৷ ৷

‘আসলে অনেকদিন ধরে এই ইমেজটা ভিস্যুয়ালাইজ করতাম৷ মনে হয়েছিল এটা থেকে একটা থ্রিলার হতে পারে৷ থ্রিলার হলেও , ‘সাহেব বিবি গোলাম ’ আদতে সর্ম্পকের গল্প৷ কিন্ত্ত মা -মাসি সম্পর্কের নয়৷ আদ্যন্ত শহুরে , মানে আর্বান , সমসাময়িক গল্প৷ যেখানে অ্যাকশন আছে , স্কিন আছে , আছে প্রেমও ,’ পার্ক স্ট্রিটের এক টি -রুম -এ বলছিলেন প্রতিম৷ নিজেই লিখেছেন চিত্রনাট্য৷ কিন্ত্ত কাস্টের ভাবনা ? ‘এই পার্ক স্ট্রিটেই যদি কাউকে জিজ্ঞেস করা হয় , কলকাতায় ৫০ বছরের অ্যাংলো ইন্ডিয়ানের চরিত্র কে করতে পারবেন , প্রত্যেকে অঞ্জনদার নামটাই করবেন৷ তাই , ছবির ‘সাহেব ’ তিনি৷ তাও বলব , টিপিক্যাল অঞ্জন দত্তকে এখানে দেখবেন না ,’ বলছেন প্রতিম৷

আর স্বস্তিকা ? ‘দেখুন , স্বস্তিকাকে যে চরিত্রই দেওয়া হোক না কেন – বার নর্তকী , অভিনেত্রী বা গৃহবধূ – ও সেগুলোকে পুরোপুরি আত্মসাত্ করে একটা অন্য মাত্রা দেয়৷ এখানে ‘বিবি ’ স্বস্তিকা৷ ওর নাম জয়া , একজন দক্ষিণ কলকাতার গৃহবধূ, যার জীবনে খুব বেশি পাওয়ার আর কিছু নেই৷ কিন্ত্ত পারিপার্শিকের পরিপ্রেক্ষিতে জয়া অনেক কিছু ‘হয়ে ’ যায়৷ গিরগিটির মতো রং বদলাতে থাকে৷ এর থেকে বেশি আর কিছু বলব না ,’ বলে মুচকি হাসলেন প্রতিম৷ বাকি রইল ঋত্বিক৷ এক গরিব ট্যাক্সি চালক জাভেদের ভূমিকায় এই ছবির ‘গোলাম ’ তিনি৷ ‘ঋত্বিকের একটা ছবি দেখিয়েছিলেন অঞ্জনদা আমায় – ‘হাতে রইল বন্দুক’৷ ও তো ব্রিলিয়ান্ট অভিনেতা৷ এই ছবিতে ওর সংলাপের থেকেও শরীরী অভিনয় বেশি৷ যেটায় ওকে ছাড়া কাউকে ভাবতে পারলাম না ,’ বললেন প্রতিম৷ গল্পর মধ্যে আছে কলকাতাতেই ঘটা কিছু সত্য ঘটনার ছায়া৷ ‘যে গল্প সোজা , সরলরেখায় চলে না , সেই আঙ্গিকই আমার পছন্দ৷ এটা ‘পাঁচ অধ্যায় ’তেও ছিল , ‘সাহেব বিবি গোলাম ’-এও আছে৷ ছবিতে নিউ ইয়ার্স ইভ একটা বড় ঘটনাবিন্দু৷ বার বার ফিরে আসে সেটা৷ এটা অবশ্য নতুন নয়৷ কিন্ত্ত আমি যেভাবে লিখেছি আশা করি সেটা নতুন ,’ বলছেন প্রতিম৷

জমজমাট থ্রিলারের শ্যুটিং শুরু নভেম্বরের মাঝামাঝি৷ পুরোটাই কলকাতায়৷ সমাজের তিনটে স্তরে বাস করা তিনজনের গল্প বলেছেন প্রতিম৷ কেমন করে তারা পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান সেটা জানার জন্য অপেক্ষা যে করতেই হবে !অঞ্জন৷

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here