পরাধীনতার শৃঙ্খলা ভেঙ্গে দেশ মাতৃকার মুক্তির জন্য নিজের সবটুকু হারানো বীর নারী বীরাঙ্গনাদের দুঃখ গাঁথার গল্প এখন থেকে জানবে নতুন প্রজন্ম।
ষ্টাফ রিপোর্টার :: এ বিষয়ে আদালত থেকে দেয়া হয়েছে নির্দেশনা। আর সেই নির্দেশ মেনে আগামী বছর থেকে স্কুল, কলেজের পাঠ্য বই এ বীরাঙ্গনাদের অবদানের কথা অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা সরকারের। তবে ইতিহাসবিদদের অভিমত, জাতির অবদান প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ধারণ করতে হলে শিক্ষার সকল স্তরেই বীরাঙ্গনাদের অবদানের কথা তুলে ধরা প্রয়োজন।
বীরাঙ্গনা, যার মানে বীরের মত লড়াই করে বাঁচে যে নারী। ঠিক তাই। কারণ সমাজ, রাষ্ট্র কিংবা পরিবারের শত অবহেলা আর বঞ্চনা সহ্য করেই বেঁচে আছেন দেশের জন্য লাল সবুজের পতাকা ছিনিয়ে আনা হতভাগ্য এই বীর নারীরা।
দেশ স্বাধীনের পর থেকে কেবল বীরাঙ্গনা উপাধিটুকু দিয়ে রাষ্ট্র পালন করেছে তার দায়িত্ব। কিন্তু আশার কথা স্বাধীনতার চার দশক পরে এসে তাদেরকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সম্মানিত করা হয়েছে। পাশাপাশি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মত বীরাঙ্গনাদের জীবন আর বীরত্বের গল্পও এখন অন্তর্ভুক্ত করা হবে স্কুল কলেজের পাঠ্য বইয়ে।
বীরাঙ্গনা ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় বেঁচে থাকার লড়াই করা, নির্যাতনে শিকার হওয়া, সবকিছু মিলিয়েই একটি মুক্তিযুদ্ধ এবং সেখানে আশা করেছিলাম জাতি স্বীকৃতিটুকু অন্তত দেবে। যতোটুকু ঘটনা তাদের কাছে জমা আছে সেটুকু যেন পাঠ্যপুস্তকে আনা হয়। ‘
আদালতের নির্দেশনা মেনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানালেন, সব প্রক্রিয়া শেষে আগামী বছরের পাঠ্যসূচিতেই বীরাঙ্গনাদের উপাখ্যান জানতে পারবে শিক্ষার্থীরা। তিনি বলেন, ‘তারা কি করে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাদের জীবন কতোটা দুর্বিষহ ছিল এই বিষয়গুলো সম্মানের সাথে আমরা পাঠ্যবইয়ে নিয়ে আসবো। ‘
এদিকে, বীরাঙ্গনাদের জীবন, অবদান, ত্যাগ, তিতিক্ষার কথা যেন অনভিজ্ঞ এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ প্রভাবিত কোন ব্যক্তিদের দিয়ে লিখানো না হয় সেই তাগিদ দেন ইতিহাসবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ‘এতে করে জাতির গৌরব ধারণ করা থাকবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। শুধু স্কুল কলেজের পাঠ্যপুস্তকে নয়, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে একটি কোর্স অবশ্যই পাঠ্য থাকা দরকার। ‘
গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের পাশাপাশি বীরাঙ্গনাদের অবদানের কথা স্কুল, কলেজের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।