পরাণ রহমানের উন্নয়ন কর্মকান্ড রাষ্ট্রীয় ভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহবানষ্টাফ রিপোর্টার :: বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থ ঘাসফুল-প্রতিষ্ঠাতা প্রতিষ্ঠাতা শামসুন্নাহার রহমান পরাণ স্মরণে সোমবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম নগরীর এম. এম. আলী রোডস্থ রয়েল গার্ডেন মিলনায়তনে তাঁর স্মৃতি ও জীবন কর্ম নিয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

আলোচনা সভায় বক্তারা পরাণ রহমানের উন্নয়ন কর্মকান্ড সমুহকে রাষ্ট্রীয় ভাবে স্বীকৃতি দেয়ার আহবান। এ সময় তারা আরো বলেন, সমাজের সর্বস্তরের প্রেরণা হয়ে বেঁচে থাকবেন পরাণ রহমান। গরীবদুখী মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য লড়াই করার মানসিকতা নিয়ে কাজে নেমেছিলেন পরান রহমান, তখন এই অঞ্চলে তাঁর সামনে তেমন দৃষ্টান্ত খুব একটা ছিল না বললেই চলে।

ঘাসফুলের নির্বাহী কমিটির জেনারেল সেক্রেটারী সমিহা সলিম এর স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে স্মরণ সভা শুরু হয়।

স্মরণ সভায় আলোচনা করেন, গ্রামীণ টেলিকম ট্রাষ্ট এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ঘাসফুলের প্রধান উপদেষ্ঠা প্রয়াত শামসুন্নাহার রহমান পরাণ এর জেষ্ঠ্য কন্যা পারভীন মাহমুদ এফসিএ, মমতার নিবার্হী পরিচালক রফিক আহমদ, ওয়াইডব্লিউসিএর  সিনথিয়া রোজারিও, ইলমার জেসমিন সুলতানা পারু, লায়ন সাকিনা ইউসুফ, লেডিস ক্লাব সভানেত্রী জিনাত আজম, বিটিভির নাসরিন ইসলাম, সাবেক মৎস কর্মকর্তা আবদুল কাদের, পরাণ রহমাণের সহপাঠী রওশন আরা মোজাফফর বুলবুল, ড.জয়নাব বেগম, লায়ন জামাল উদ্দিন, সাংবাদিক নাজিম উদ্দিন শ্যামল, মরহুমার নাতনী সাদিয়া রহমান, কবি ও আলোকচিত্রী মওদুদুল আলম, সমাজবিজ্ঞানী ড. মন্‌জুর উল আমিন চৌধুরী, লায়ন নাজমুল হক চৌধুরী, ছোট বোন মিনারা হোসেন, শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ রীতা দত্ত, ঘাসফুলের উপ পরিচালক মফিজুর রহমান, প্রকৌশলী ও ঘাসফুল স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র অভিরাম দাস ও ঘাসফুলের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. গোলাম রহমান।

ঘাসফুলের-প্রতিষ্ঠাতা-শামসুন্নাহার-পরাণউল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ঘাসফুল- প্রতিষ্ঠাতা শামসুন্নাহার রহমান পরাণ ইহলোক ত্যাগ করেন। ১৯৭২ সালে যুদ্ধ বিধ্বস্থ দেশ পুনর্গঠনে রিলিফ-ওয়ার্ক এর মাধ্যমে ঘাসফুল এর আত্মপ্রকাশ। দলিত ও বঞ্চিত মানুষের প্রতিক হিসেবে পরাণ রহমান সংস্থাটির নামকরণ করেন পদদলিত “ঘাসফুল”। ঘাসফুল নিয়ে তাঁর স্বপ্ন ছিল সমাজের নির্যাতিতা নারী, তৃণমুল ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে বিরাজ করবে পরিকল্পিত পরিবার, সুখী পরিবার। এরকম সুখী পরিবার নিয়ে সৃষ্টি হবে সুখী সমাজ, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ- যেখানে থাকবে না কোনধরণের বৈষম্য, শোষণ, নিপীড়ন। দেশ উন্নয়নে অংশ নিয়ে নারীরা পাবে সমান অধিকার।

উন্নয়নকর্মী পরাণ রহমান তার সংগঠনের ‘লগো’তে স্থাপন করেন নারীর কানের-দুলে ছোট পরিবারের চিহ্ন; সুখী পরিবার। ঘাসফুল আজ নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে পার করছে উন্নয়নযাত্রার চুয়াল্লিশ বছর। পরাণ রহমান বুক দিয়ে আগলে রেখেছিলেন ‘ঘাসফুল’। তাঁর তারুণ্য আর বার্ধক্যের পুরোটা সময় উৎসর্গ করেছেন ঘাসফুল এর উন্নয়নে। বলা যায় পরাণ রহমান তাঁর সমগ্র জীবনটাই কাটিয়েছেন সমাজের দরিদ্র জনগোষ্টির বসতিস্থল ঘুরে ঘুরে। তিনি নিঃসংকোচে যাতায়াত করেছেন সমাজের তথাকথিক অচ্ছুত সম্প্রদায়ের বসতিতে (সুইপার কলোনী)। তিনি ভক্তি দিয়ে মিশেছেন, আপন করে নিয়েছেন হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজনদের। তিনি প্রায়ই চট্টগ্রাম নগরীর পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের আবাসস্থল সেবক কলোনীগুলোতে গিয়ে খুবই মর্মাহত হতেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here