এনামুল হক কাশেমী, বান্দরবান প্রতিনিধি :: জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের নোমেন্স ল্যান্ডের কাছে ওপারে গুলি বর্ষণের শব্দে কোনাপাড়ার শুন্যরেখায় অবস্থানরত সাড়ে ৬ হাজার রোহিঙ্গা চরম আতঙ্ক ও উৎকন্ঠায় নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কয়েক দফায় গুলির্বষণের শব্দ পেয়েছেন রোহিংগাসহ স্থানীয়ারা। মিয়ানমার বাহিনী সীমান্তের ওপারে কাটাতারের বেড়ার ওপর মই বসিয়েছে শুন্য রেখায় অনুপ্রবেশের লক্ষ্যে।
অপরদিকে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বিজিবি এবং মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বিজিপি শুক্রবার বিকেলে এক পতাকা বৈঠকে বসেছে বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে। বৈঠক চলমান থাকায় সর্বশেষ তথ্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বিজিবি,পুলিশ এবং বাসিন্দারা বলছেন,গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তুমব্রু সীমান্তের কোনা পাড়ার নোমেন্স ল্যান্ডের ওপারে আকস্মিকভাবে অতিরিক্ত সৈন্য সমাবেশ ঘটায় মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। জিরো য়েন্টে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের দিকে ভারী অস্ত্রের পাশাপাশি হালকা অস্ত্র তাক করে রেখেছে বর্মী সেনারা।
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের মতো যে কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশে বর্ডার গাড (বিজিবি) পুরোদমে সীমান্ত এলাকায় তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। মিয়ানমারের ওপারে সৈন্য সমাবেশকে কেন্দ্র করে নাইক্ষংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্টে বিজিবির টহলদান ও নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
দায়িত্বশীল সুত্রগুলো জানায়, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কয়েকদফা তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার সেনারা ফাঁকা গুলি বর্ষণের শব্দ পেয়েছেন জিরো পয়েন্টে অবস্থানরত রোহিংগারা। ফলে তরা দিনকাটাচ্ছেন আতংক ও উৎকন্ঠায়। তবে রোহিঙ্গারা বৃহস্পতিবার রাত থেকেই লাঠিসুটা নিয়ে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন রোহিংগারাও। বিজিবিও সীমান্তের এপারে টহলদার জোরদার করেছে বলেও বিজিবি সুত্র নিশ্চিত করেছে।
তুমব্রু সীমান্তের কোনাপাড়া এলাকায় অবস্থানরত বেশকজন রোহিঙ্গা স্থানীয়দের জানায়, বর্মী সেনারা রাতে মদ্যপান করে কাঠবিড়ালিকে গুলি করে মেরে পুড়িয়ে খায়। বৃহস্পতিবার রাতের গুলির শব্দ সীমান্তজুড়ে আতঙ্ক রাখার জন্য করা হচ্ছে বলে তারা মনে করছেন। এর প্রতিজবাবে বিজিবি সদস্যদের পাশাপাশি রোহিংগারাও রাতজেগে পালাক্রমে পাহারা বসিয়েছে।
নাইক্ষংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল মিডিয়াকর্মীদের বলেছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর তুমব্রু সীমান্তের ওপারে কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণের শব্দ পেয়েছেন রোহিংগাসহ স্থানীয়রা। হয়তো সীমান্তে আতঙ্ক ছড়ানোর লক্ষ্যেই মিয়ানমারের সৈন্যরা ফাঁকা গুলি ছুঁড়তে পারে, বাংলাদেশকে লক্ষ্য করে নয়। তবে গুলিবর্ষণে কোন হতাহতের সংবাদ এখনও পাওয়া যায়নি। বিজিবি এই পরিস্থিতিতে সতর্ক টহলদান ও নজরদারি বাড়িয়েছে।