ঢাকা: এক শিক্ষকসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিষ্ঠানটির অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজের মোট ১০২ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

তবে ঢাবির রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক নূরউদ্দিন আলোকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।

বাংলামেইলকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর এম আমজাদ আলী।

তিনি জানান, নভেম্বর থেকে গত ৫ মাসের বিভিন্ন পরীক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রতিষ্ঠানটির অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজের ১০২ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজনকে সর্বোচ্চ সাড়ে তিন বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। শিক্ষার্থীরা অসাধু উপায়ে পরীক্ষা দেয়ায় বিভিন্ন সুপারিশের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

রোববার সন্ধ্যায় ঢাবির উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে এ সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর ‘মিথ্যা ও ভুয়া’ তথ্যসমৃদ্ধ গবেষণাপত্র (থিসিস) দেয়ার প্রমাণ পাওয়ায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক নূরউদ্দিন আলোর পিএচইডি ডিগ্রি বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য নাসরিন আহমাদ তখন বলেন, ‘পিএইচডি গবেষণা একটি সংগঠিত প্রক্রিয়া। নূর উদ্দিন যে মেথোডলজি ব্যবহার করে গবেষণাটি করেছেন তা বাস্তবে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। গবেষণাজুড়েই তার মনগড়া কথা রয়েছে যা খুবই হাস্যকর।’

থিসিস পেপারে নূরউদ্দিন দাবি করেছেন, তার গবেষণায় বিশ্বের ৮০টি দেশের ১২ লাখ ৭৫ হাজার ৪৭ সাক্ষাৎকারদাতার মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ২০টি দেশের রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনার। সাক্ষাৎকার নিতে বিভিন্ন দেশে তিনি ২১ জন সহকারীও নিযুক্ত করেন বলেও দাবি করেছেন। তিন বছরেরও কম সময়ে পিএইচডি গবেষণা সম্পন্ন করেছেন তিনি। অভিসন্দর্ভে উল্লেখিত তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন এক হাজার ১৬৪ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তিনি।

জানা গেছে, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক নূরউদ্দিন আলো পিএইচডি ডিগ্রি লাভের জন্য ২০০৮ সালের জুন মাসে ‘দ্য প্রাকটিসেস অব মার্কসিজম অ্যান্ড দেয়ার ইমপেক্ট অন মডার্ন ওয়ার্ল্ড: দ্য কেইস অব অবজেকটিভাইজেশন’ শীর্ষক বিষয়ে গবেষণা শুরু করেন। গবেষণাপত্র জমা দেন ২০১১ সালের মে মাসে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই বছরের ১০ আগস্ট তাকে পিএইচডি ডিগ্রি দেয়। গতবছর ১ জুন তার ওই থিসিস ভুয়া অভিহিত করে একই বিভাগের ৫ জন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here