রবীন্দ্র নাথ পাল, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: একাত্তরের মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে মুক্তাগাছার চেচুয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার জাতীয় পার্টির নেতা আলবদর মাওলানা একেএম রেজাউল হক (৭০) ওরফে আক্কাস মৌলভীকে থানা পুলিশ বুধবার দুপুরে উপজেলার চেচুয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে।
মুক্তাগাছা থানার সূত্র জানায় তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালে একাত্তরের হত্যা,অগ্নিসংযোগসহ মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলা রয়েছে। ট্রাইবুরালের নির্দেশে বুধবার দুপুরে পুলিশ তার গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে মুক্তাগাছার পূর্বচেচুয়া গ্রামের মৃত মুসলেম উদ্দিনের ছেলে রেজাউল হক ওরফে আক্কাস মৌলভী একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মাদ্রাসা ছাত্র থাকা অবস্থায় আলবদর বাহিনীতে যোগ দেয়।
সেসময় থানা আলবদর কমান্ডার সুরুজের নেতৃত্বাধীন তার এবং স্থানীয় চানপুরের আলবদর ও রাজাকার বাহিনীর কর্মকান্ড দুর্ধর্ষ হয়ে উঠে। গ্রেফতারকৃত প্রভাবশালী এ বদর নেতার বিরুদ্ধে সুবর্ণ খিলা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আহমদ আলীসহ অপর এক মুক্তিযোদ্ধা হত্যা, চেচুয়ায় হিন্দুবাড়িতে গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ করার অভিযোগ রয়েছে।
হিন্দু বাড়ির সবাইকে তাড়িয়ে জমি দখল করে নেয়ার অভিযোগও রয়েছে। স্বাধীনতার পর তিনি অত্মগোপনে চলে যান। পরে নিজের নাম আক্কাস আলী পরিবর্তন করে এ এসএম রেজাউল হক লিখে পূণ:রেস্ট্রিশনের মাধ্যমে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ১৯৭৫’র পট পরিবর্তনের পর সে প্রকাশ্যে বেড়িয়ে আসে।
পরে মাদ্রাসায় শিক্ষকতার পাশাপাশি সাবেক স্পিকার মরহুম শামছুল হুদা চৌধুরির হাত ধরে প্রথমে বিএনপি ও পরে জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে সক্রিয় হন। পরে তিনি চেচুয়া দাখিল মাদ্রাসায় সুপার ও মুক্তাগাছা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আসীন হয়ে দুর্দান্ত প্রতাবের সাথে চলতে থাকেন।
সর্বশেষ উপজেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলে তাকে আহবায়কের পদ থেকে সরিয়ে উপজেলা জাপার সদস্য করা হয়। তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের তদন্ত টিম দীর্ঘ সময় তদন্ত শেষে অভিযোগ দায়ের করে। তার গ্রেফতারের খবরে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা স্বস্থি প্রকাশ করেছেন। মুক্তাগাছা থানার ওসি আবু মোঃ ফজলুল করিম তাকে গ্রেফতারের সত্যতা স্বীকার করেছেন।