৩৫২ং৫ স্টাফ রিপোর্টার :: রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা থেকে ৭ দফা দাবি ঘোষণা করেছে বিএনপি। জনসভা থেকে এসব দাবি ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

৭ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- তফসিল ঘোষণার আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানসহ সকল নেতাকর্মীর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, সরকার ভেঙে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার, ইভিএম বাতিল, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও নতুন করে মামলা দেয়া বন্ধ করা।

দাবি আদায়ে বিএনপির সমাবেশ থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়, আগামী ৩ অক্টোবর জেলা পর্যায়ে সমাবেশ ও ডিসি বরাবর স্মারকলিপি পেশ এবং ৪ অক্টোবর বিভাগীয় শহরে সমাবেশ ও বিভাগীয় কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান।

জনসভায় সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা এই সরকারকে বাধ্য করব দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে এবং তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে এবং আমাদের যেসমস্ত নেতা-কর্মী বন্দি রয়েছে তাদের মুক্তি দিতে।

ফখরুল বলেন, আমরা ক্ষমতায় গেলে ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে ক্ষমতার ভারসাম্য আনা, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

তিনি বলেন, এছাড়া বিদুৎ ও জ্বালানি সেবা নিশ্চিত করা, গণতান্ত্রিক ধারাকে অব্যাহত রাখা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বজায় রাখাসহ, জঙ্গিদের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে না দেয়াসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে।

বিএনপির এই জনসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। প্রধান বক্তা দলটির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। আর এতে সভাপতির ভাষণ দেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জনসভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকে দেশনেত্রীর দেওয়া দাবিতে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। অনেক রাজনৈতিক ও ব্যক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টি হয়েছে যে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে। সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হতে হবে।

তিনি বলেন, আর এই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে হলে বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে ছাড়া কোনো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে পারে না, জনগণ তা হতে দেবে না।

সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দলীয় মনোভাবাপন্ন মানসিকতা পরিহার করে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের অনুরোধ জানান সাবেক এই মন্ত্রী।

স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, আজকের পত্রিকায় দেখলাম, এরা (সরকার) মাঠ দখলের কথা বলেন। আমরা বলতে চাই, আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি যদি প্রতিহত করেন, আমরাও আপনাদের প্রতিহত করব। এবার ছেড়ে দেব না।

আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, সরকারের মধ্যে ভীতি কাজ করছে, ভয় কাজ করছে। এখন একটা আওয়াজ উঠেছে, জাতীয় ঐক্য হবে। হবে কি, না হবে, আল্লাহই জানেন। সরকার বহু চেষ্টা করছে, যাতে ঐক্য না হয়।

তিনি বলেন, হলে ভালো, না হলে ক্ষতি নাই। ঐক্য হোক না হোক, বিএনপিকে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।

জনসভায় বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, হাফিজউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, বরকতউল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, জয়নাল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান।

এছাড়াও জয়নুল আবদিন ফারুক, ফজলুর রহমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন, মজিবর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, আসাদুল হাবিব দুলু, মাহবুবুর রহমান শামীম, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিলকিস জাহান শিরিন, শামা ওবায়েদ, বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ বক্তব্য রাখেন।

রোববার দুপুর ২টায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে এ জনসভার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। জনসভা শুরুর পর স্বাগত বক্তব্য দেন ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান।

জনসভা পরিচালনা করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আজকের এ সভা করে বিএনপি।

তবে দুপুর ২টায় জনসভা শুরু হলেও দুপুর ১২টার আগে থেকেই নেতাকর্মীরা জনসভাস্থলে এসে হাজির হন। বিএনপির নেতাকর্মীদের আগমনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান লোকে লোকারণ্যে পরিণত হয়।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here