জহিরুল ইসলাম শিবলু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :: লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে খেজুরের রস চুরির অপবাদ দিয়ে আনোয়ারা বেগম নামের এক গৃহবধুকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করেছে ইউপি সদস্যসহ গ্রাম্য মাতাব্বররা । ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) রাত ৯টায় রামগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের ফকিরপুর গ্রামের গোল মাধের বাড়িতে। এ ব্যাপারে রবিবার বিকেলে আনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আনোয়ারা বেগমের স্বামী দিনমুজুর মো. মনির চলতি মৌসুমে কয়েকটি খেজুর গাছ পাশ্ববর্তী নারায়নপুর গ্রামের রাজের বাড়ির সলেমানকে বর্গা দেয়। সলেমান গাছ বর্গা নেওয়ার পর খেজুরের রস একাই ভোগ করতে থাকেন। এতে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনোয়ারা বেগম তার ছোট শিশুকে নিয়ে বাড়ির পাশের ছোট একটি খেজুর গাছের রস আনতে যায়। এ সময় সলেমান তাকে চোর আখ্যা দিয়ে ঘটনাস্থলে বেদম মারধরের পর আটক করে রাখে। পরে ওই দিন রাত ৯টা স্থানীয় মাসিমপুর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. খিজির আহম্মেদ, দক্ষিন নারায়ানপুরের ইউপি সদস্য মো. বিল্লাল হোসেন ও একই ওয়াডের্র আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক খোরশেদ আলম দুলুসহ গ্রাম্য মাতাব্বরদের নিয়ে একটি শালিশী বৈঠক বসে। এতে আনোয়ারা বেগমকে চোর সাবাস্ত্য করে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও বেত্ররাগাত করার সিদ্ধান্ত হয়।
উক্ত রায়ের আলোকে সলেমানের নেতৃত্বে কাউনিয়া বাজারের আ. মান্নান, এমরান হোসেন, নারায়নপুরের আঃ রব, মো. লিটন, মো. স্বপন, আহসান উল্যা মিলে গৃহবধু আনোয়রাকে বেদম মারধর শেষে বিবস্ত্র করে অমানুষিক নির্যাতন চালায় এবং জরিমানার টাকা দিতে না পারায় তার একটি গরু ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। বিবস্ত্র করে নির্যাতনের দৃস্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে চড়িয়ে পড়লে এলাকাব্যাপী ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
দক্ষিন নারায়নপুরের ইউপি সদস্য বিল্লাল হোসেন জানান, ওই মহিলার কাপড় খুলে ভিডিও করার বিষয়ে আমরা কিছু জানিনা। মোবাইলে খবর পেয়ে রাত ১১টায় আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। তবে তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে আনোয়ারা চোর প্রমানিত হওয়ায় কিছু টাকা জরিমানা করেছি। কিন্ত তার কাছে টাকা না থাকায় একটি গরু মেম্বার খিরিজের জিম্মায় রাখা হয়েছে। টাকা দিলে গরু দিয়ে দেওয়া হবে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মহসিন জানান, তদন্তের স্বার্থে এখন বেশী কিছু বলা যাচ্ছে না। আসামীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ তোতা মিয়া জানান, এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।