গণ-গোসল উৎসবে রাজধানীর সকল পুকুর, লেক, জলাধার, দখল-দূষণ মুক্ত করার দাবীস্টাফ রিপোর্টার :: তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে এবং সুপেয় পানির চাহিদা পুরনে রাজধানীর সকল পুকুর, লেক, জলাধার, দখল-দূষণ মুক্ত কর, দাবিতে আজ শনিবার ( ৮ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টায়  রাজধানীর  হাতির ঝিলের মধুবাজার পয়েন্টে গণ-গোসল উৎসবের আয়োজন করে।

পরিবেশ আন্দোলন  মঞ্চ, সন্মিলিত জলাধার রক্ষা আন্দোলন, নিরাপদ ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, এলআরবি ফাউন্ডেশন, অরুণোদয়ের তরুণ দল, এসইএল চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন, স্বপ্নের সিড়িঁ সমাজ কল্যান সংস্থা, বাচঁতে শিখ নারী,  জনস্বার্থ ফাউন্ডেশন, আমিই বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর যৌথ উদ্যোগে গণ-গোসল উৎসবের আয়োজন করা হয়।

সন্মিলিত জলাধার রক্ষা আন্দোলনের আহবায়ক ইবনুল সাঈদ রানার সভাপতিত্বে গণ-গোসল উৎসবে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চ এর সভাপতি আমির হাসান মাসুদ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপার যুগ্ন সম্পাদক হুমায়ুন কবির সুমন, এলআরবি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী সুলতানা রিজিয়া, অরুণোদয়ের তরুণ দলের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাবু, সন্মিলিত জলাধার রক্ষা আন্দোলনের  সদস্য সচিব সাইফুল ইসলাম সোভন,স্বপ্নের সিড়িঁ সমাজ কল্যান সংস্থার সাধারন সম্পাদক উম্মে সালমা, শেখ মোঃ ইউসুফ হোসেন, জুয়েল রানা, আবাসন নিউজ এর আরিফুল ইসলাম প্রমূখ।

বক্তারা বলেন, তিন দশক আগেও রাজধানী ঢাকা ছিল দৃষ্টিনন্দন পুকুর, খাল ও ঝিলের শহর। অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং ভরাট ও দখলের কারণে এসবের অস্তিত্ব এখন নেই বললেই চলে। রাজধানী হয়ে উঠেছে ইট-পাথরের শহর। প্রাকৃতিক এসব পানির আধার না থাকায়, তাপমাত্রা বৃদ্ধিসহ ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়াসহ বিশুদ্ধ পানির সংকট ও পরিবেশ বিপর্যয় এখন নগরীর নিত্যদিনের বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ১৯৮৫ সালে রাজধানীতে দুই হাজার পুকুর ছিল। শুধু পুকুর নয়, প্রায় ৪৪টি স্রোতস্বিনী খাল ছিল। সচেতনতা ও পরিবেশবান্ধব চিন্তার অভাবে নগরীর পুকুর, ঝিল ও খাল হারিয়ে গেছে। নগর উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত একাধিক সংস্থার সমন্বয়হীনতার কারণে এগুলো হারিয়ে গেছে। যে অল্প সংখ্যক পুকুর রয়েছে, সেগুলোও অস্তিত্ব সংকটের মধ্যে রয়েছে।

বক্তারা আরো বলেন, রাজধানীতে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বসবাস করে ৪৩ হাজার ৫০০ জন লোক। এই জনসংখ্যার সাথে প্রতিদিন গড়ে যুক্ত হচ্ছে ১৭০০ জন। এত অধিক সংখ্যক মানুষের স্থান সংকুলান করার ক্ষেত্রে যথাযথ কোনো পরিকল্পনাও নেই। এর ফায়দা নিচ্ছে অবৈধ দখলকারীরা। পুকুর দখল, খাল দখল থেকে শুরু করে খোলা মাঠ ধীরে ধীরে গ্রাস করে ফেলছে। এর ফলে সেবা ব্যবস্থা, পয়োনিষ্কাশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যে দুই হাজার পুকুর ছিল সেগুলোর মধ্যে প্রায় ১ হাজার ৯০০টি কোথায় গেল, ৪৪টি খালের সিংহভাগ কেন হারিয়ে গেল? বলার অপেক্ষা রাখে না, সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের গোচরেই এসব খাল, পুকুর ও ঝিল দখল হয়েছে।

বক্তারা বলেন, পুকুর, খাল ও ঝিল রক্ষা এবং উদ্ধার করার দায়িত্ব যেসব প্রতিষ্ঠানের, তাদের এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতে হবে।  রাজধানীকে বসবাস উপযোগী করে তুলতে এবং আরও খারাপ পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হওয়া রুখতে তাদের উদ্যোগী হতে হবে।

গণ-গোসল উৎসবে বক্তারাম হাতির ঝিল প্রকল্পের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি  পুকুর, খাল ও ঝিল রক্ষায় আরো কঠোর উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ জানান।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here