বাংলার অতি  প্রাচীন শিল্পখাতের নাম কুটিরশিল্প। গ্রামবাংলার স্বনির্ভর আন্দোলনের হাতিয়ার এই কুটিরশিল্পের সঙ্গে মিশে আছে আবহমান বাংলার কৃষ্টি-সভ্যতা এবং ঐহিত্যের প্রবহমান ধারা। অপার সম্ভাবনার এই শিল্পখাত খেটে খাওয়া গ্রামীণ মানুষের অনবদ্য শৈল্পিক সৃষ্টি এবং জীবিকার অন্যতম মাধ্যম। গণমুখী, স্থানীয় কর্মসংস্থানভিত্তিক এই শিল্প খাতটির অমিত সম্ভাবনা সত্ত্বেও সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে কাক্সিক্ষত সফলতা পাচ্ছে না কুটিরশিল্প। তবে ভাবতেও অবাক হতে হয় Ñ চার দশকের অবহেলার শিকার এই শিল্প খাতের সঙ্গে জড়িত কিছু পেশাজীবী জনগোষ্ঠী বংশপরম্পরায় ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে এখনো সচল রেখেছেন কুটিরশিল্পের চাকা। যদিও সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কিছু নতুন মাত্রাও যোগ হয়েছে এই শিল্পের সঙ্গে। শিক্ষিত, স্বল্প শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা তাদের মেধা ও শ্রম নিয়োজিত করে কুটিরশিল্পে নিয়ে এসেছে নতুন নতুন সংযোজন। আমাদের ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প, মসলিন, জামদানি, নকশিকাঁথা, তাঁতশিল্পের গৌরবময় ইতিহাসের চিরন্তন সাক্ষী এই কুটিরশিল্প। এই ধারাবাহিকতা এখন অনেকদূর এগিয়ে গেছে মেধা এবং শৈল্পিকতায়। যেমন এই শিল্পে যোগ হয়েছে- শীতলপাটি, কলাগাছের ম- থেকে তৈরি কাগজ, কারুকার্যের টুপি, মাথার চুল, মাছের আছিল, কাঁটা থেকে গবাদিপশুর হাড়গোড় পর্যন্ত ব্যবহৃত হচ্ছে উৎপাদনের পণ্যসম্ভারের তালিকায়। রফতানি হচ্ছে সেসব পণ্য। নিয়ে আসছে বৈদেশিক মুদ্রা। খুলে দিচ্ছে শিল্পের সম্ভাবনার দ্বার। এ ক্ষেত্রে সরকারের সুদৃষ্টি না থাকলেও দেশের মানুষের একান্ত নিরলস চেষ্টায় দেশের গ-ি ছাড়িয়ে বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছে দেশের রফতানি বাজারের সম্ভাবনাকে।

বহুকাল থেকে আমাদের কারুশিল্পীদের উৎপাদিত কুটির ও হস্তশিল্পজাত পণ্যসামগ্রী দেশীয় বাজারসহ পৃথিবীব্যাপী সমাদৃত হয়ে আসছে। দেশব্যাপী কুটির ও হস্তশিল্প খাতের প্রসারের যে ব্যাপক সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে এ খাতের শিল্প ইউনিট সংখ্যার ক্রমবৃদ্ধিই এর প্রমাণ বহন করে। তথ্য থেকে জানা যায়, ১৯৬১ সালে দেশে কুটির ও হস্তশিল্পের সংখ্যা ছিল দুই লাখ ৩৫ হাজার, ১৯৯১ সালে চার লাখ ৫ হাজার, ২০০৫ সালে এ সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ ৭৭ হাজার। আর বর্তমানে পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে দেশে কুটিরশিল্পের সংখ্যা আট লাখ ৩০ হাজারের অধিক। এ শিল্পকে ঘিরে কর্মসংস্থান হয়েছে ২৯ লাখেরও বেশি মানুষের। আবার দেশজ উৎপাদনে কুটিরশিল্পের অবদান প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। দেশের শিল্পখাতে অগ্রগতির পথে কুটিরশিল্পের এই অবস্থান নিঃসন্দেহে শুভ লক্ষণ। ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত বিসিকের কারুপল্লী গ্রন্থে উল্লেখ আছে Ñ সে সময় দেশব্যাপী  চার হাজার ২২৫টি কারুপল্লীতে ২৯ ধরনের ২৯টি পণ্যসামগ্রী উৎপাদিত হতো। এসব কারুপল্লীর মধ্যে মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, পাটি ও মাদুর তৈরি, গহনা, নকশিকাঁথা, কাঠের হস্তশিল্প, পাটজাত পণ্য, কাঁসা-পিতল, চামড়ার হস্তশিল্প ছিল অন্যতম। তবে সময় ও চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক কারুপল্লীর অস্তিত্ব যেমন বিলুপ্ত হয়েছে তেমনি নতুন নতুন অনেক কারুপল্লী গড়ে উঠে এ শিল্পের বিকাশে নতুন সম্ভাবনা জাগিয়েছে।
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে গড়ে উঠেছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম তাঁতের বাজার ‘কাপুড়িয়া হাট’। হাট এবং তাঁতশিল্পকে ঘিরে এখানকার সবকিছু। এমনকি হাটের দিন রোববার বন্ধ থাকে এই এলাকার স্কুল-কলেজ। কুমারখালীতে হস্তচালিত ৪০ হাজার এবং বিদ্যুৎচালিত নয় হাজার তাঁত রয়েছে। এ শিল্পের ওপর নির্ভর করে প্রায় দেড় লাখ তাঁতি, শ্রমিক-কর্মচারী জীবিকা নির্বাহ করেন। টাঙ্গাইলের মধুপুরে কলাগাছের খোল আর আনারসের পাতা থেকে আঁশ ছাড়িয়ে সুতা বানিয়ে কাপড় তৈরি হচ্ছে। এ কাজটি করছে মেনোনাইট সেন্ট্রাল কমিটি (এমসিসি) নামক একটি বেসরকারি সংস্থা। ফিলিপাইনসহ আরো কয়েকটি দেশে আরো আগেই এ ধরনের উপাদান থেকে কাপড় তৈরি করলেও বাংলাদেশে এ ধরনের উদ্যোগ এই প্রথম। এই কলার খোল আর আনারসের পাতার তৈরি কাপড় থেকে দেখা দিয়েছে রফতানি আয়ের সম্ভাবনা।
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় কচুরিপানা দিয়ে তৈরি কাগজ দেশের বিভিন্ন স্থানসহ বিদেশেও পাঠানো হচ্ছে। এ কাজ করে ওই অঞ্চলের দেড়শ অসহায়-দরিদ্র মহিলা জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। ১৯৯৩ সালে উপজেলার কালুরপাড় নামক স্থানে বেসরকারি সংস্থা মেনোনাইট সেন্ট্রাল কমিটি (এমসিসি) ১০ জন অসহায়-দরিদ্র মহিলা নিয়ে কচুরিপানা দিয়ে ‘বিবর্তন’ নামের হ্যান্ডমেইড পেপার তৈরির কাজ শুরু করে। এ ছাড়া আমেরিকা, কানাডা, ইতালি, জার্মানি, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, স্পেন, নিউজিল্যান্ড ও জাপানে এ কাগজ থেকে উৎপাদিত পণ্য রফতানি করা হয়। বর্তমানে বিবর্তন কুটিরশিল্প এক একর জমির ওপর পাঁচটি ভবন নির্মাণ করে হ্যান্ডমেইড পেপারশিল্পের কাজ চালাচ্ছে। সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর কমপক্ষে এক কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হচ্ছে। ইউরোপে যাচ্ছে বগুড়ার কাহালু উপজেলার পাঁচখুর গ্রামের তৈরি তালপাতার হস্তশিল্পপণ্য। জানা গেছে, বগুড়ায় তৈরি হস্তশিল্প নজর কেড়ে নিয়েছে ইংল্যান্ড, ডেনমার্ক, ইতালি, নরওয়েসহ বিভিন্ন দেশের। বিস্ময়কর শিল্পনৈপুণ্য ও বিরাট এক সম্ভাবনার দরজা খুলে গেছে। শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রবেশ করেছে বাংলার কাদামাটির খাঁটি সোনা Ñ বাংলার টাইলস। পোড়ামাটির সোনায় হতাশা কেটে গেছে মৃৎশিল্পীদের। আধুনিক শিল্পের একটি নতুন প্রয়াস। চোখে পড়ার মতো সাফল্য। নিভৃত কুটিরে কায়িক পরিশ্রমের মাঝেও রয়েছে উল্লাস-কোলাহল। মাটি আর পানি মিশিয়ে বানানো হচ্ছে তুলতুলে কাদা। রোদে শুকানো হচ্ছে। পুড়িয়ে তৈরি করা হচ্ছে মাটির সোনা। আছে আমাদের শৈল্পিক ঐতিহ্য কুমিল্লার খাদি। এ শিল্পটাকে ঘিরে কুমিল্লায় গড়ে উঠেছে বিশাল বাজার। কুমিল্লা ছাড়াও ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহীসহ বড় বড় শহরগুলোতেও বর্তমানে তৈরি কথিত এই খাদি বা খদ্দরের ব্যাপক প্রসার হচ্ছে। যমুনার চর এলাকায় সাধারণ তালপাতা ও ছনের তৈরি ডালা ও চালুন সামগ্রী অনেক পরিবারে এনেছে সচ্ছলতা, দেশের জন্য এনেছে বৈদেশিক মুদ্রা। ‘ডালাখ্যাত’ হাপুনিয়া গ্রামের নাম কজনে জানেন! কেবল গ্রামই নয়, উপজেলার প্রায় ২০ গ্রামের কয়েক হাজার নারী-পুরুষ ডালা বা ঝুড়ি অথবা বাস্কেট তৈরির হস্তশিল্পের সঙ্গে নিজেদের ভাগ্য জড়িয়ে ফেলেছেন। আর নারীর হাতের কারিগরি ছোঁয়ায় তালপাতা ও ছনের তৈরি ওই রকমারি পণ্য আজ দেশের সীমানা পেরিয়ে সুদূর ইউরোপের দেশগুলোতেও যাচ্ছে। ১৯৯০ সাল থেকেই ঢাকা হ্যান্ডিক্রাফট, সান ট্রেড হ্যান্ডিক্রাফট, বাংলাদেশ হ্যান্ডিক্রাফটসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা এ শিল্পের ওপর কাজ করছে। হাপুনিয়া, মহিপুর, কামরিচা, গোসাইবাড়ি, বাগড়া, তাজপুর, পেঁচুল, টুনিপাড়া, ভাটগাড়ি, ভবানীপুর, আমিনপুর, ছোনকা ও বেলগাড় গ্রামের প্রায় তিন হাজার নারী এ পেশার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। পাশাপাশি কয়েকজন পুরুষও এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। ঝালকাঠির শীতলপাটি দেশের অন্যতম একটি কুটিরশিল্প ও গৌরবময় ঐতিহ্য। ঝালকাঠির সাচিলাপুর, রামনগর, কিফাইত নগর, ডহরশংকর, হাইলাকাঠি, সরই, বাহাদুরপুর, সাংগর, নীলগঞ্জ, হেলোঞ্চ ও কাজলকাটি গ্রামের প্রায় ২০০ একর জমিতে ছড়িয়ে আছে প্রায় এক হাজারটি পাইত্রা বাগান। এসব গ্রামে পরিকল্পিতভাবে পাইত্রা চাষ করা হয়। আর এই পাইত্রা দিয়েই তৈরি হয় শীতলপাটি। এ জেলার প্রায় ৬০০ পরিবার সরাসরি পাটিশিল্পের সঙ্গে জড়িত। এ ছাড়া পরোক্ষভাবে শীতলপাটির ওপর নির্ভর করে বেঁচে আছে আরো অন্তত কয়েক হাজার পরিবার। জানা গেছে, প্রায় দেড়শ বছর আগে এ অঞ্চলে শীতলপাটির কাঁচামাল পাইত্রা চাষ শুরু হয়। তারপর ক্রমে এর প্রসার ঘটে জেলার বিভিন্ন এলাকায়। বর্তমানে এটি অর্থকরী শিল্পে পরিণত হয়েছে। কুটিরশিল্পের সাফল্য-সম্ভাবনার খবর এত অল্প পরিসরে শেষ করার নয়।
আমরা জানি একসময় আমাদের হস্তশিল্পের বাজার ছিল শুধু ইউরোপের কয়েকটি দেশে। স্বাধীনতা-উত্তর এ খাতে দেশের রফতানি আয় ছিল মাত্র  শূন্য দশমিক তিন মিলিয়ন টাকা। নব্বই দশকে এই খাতের আয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ২১১ মিলিয়ন টাকায়। নতুন নতুন সংযোজন এই শিল্পের সম্ভাবনাকে পুনর্জাগরণ ঘটিয়েছে। এ ধারবাহিকতায় বর্তমানে বাংলাদেশের হস্ত ও কুটিরশিল্পজাত পণ্যের প্রধান বাজার হচ্ছে যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, অস্ট্রিয়া, স্পেন, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ফিনল্যান্ড, সুইডেন ও দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশ। এই শিল্পবাজারের পরিব্যাপ্তি বিকাশের গতিধারা সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে। তথ্য অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কুটিরশিল্পের বুনিয়াদি অবস্থান গ্রামাঞ্চলকে কেন্দ্র করেই। তবে  সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তরুণ-তরুণীদের মেধাশক্তি, সৃজনী ক্ষমতা আর প্রযুক্তির আলিঙ্গন পেয়ে কুটিরশিল্পের সীমানা গ্রাম থেকে মফস্বল Ñ এমনকি প্রধান শহরগুলোতেও ডালপালা মেলেছে। ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোয় উৎপাদিত পণ্যের বাজারমূল্য ৩৯ হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা। আরেক তথ্যে জানা গেছে, মাত্র ৩৫ শতাংশ কুটিরশিল্প বিসিকের তালিকাভুক্ত, বাকি ৬৫ শতাংশই তালিকার বাইরে। সবচেয়ে বেশি ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পের প্রতিষ্ঠান রয়েছে ঢাকা বিভাগে Ñ প্রায় আড়াই লাখ। সবচেয়ে কম সিলেট বিভাগে Ñ প্রায় ২৮ হাজার । তাছাড়া বরিশাল বিভাগে প্রায় ৫২ হাজার, চট্টগ্রামে এক লাখ ১৬ হাজার, খুলনায় প্রায় এক লাখ ২৩ হাজার, রাজশাহীতে এক লাখ ৩০ হাজার ও রংপুরে প্রায় ৮৩ হাজার ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের ৯৬ শতাংশই একক মালিকানা এবং ৩ শতাংশ যৌথ মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত।
শিল্প খাতে রফতানি বৃদ্ধির জন্যই দেশের কুটির ও হস্তশিল্পের প্রসার ঘটানো প্রয়োজন। এটি স্বল্পপুঁজিতে অধিক কর্মসংস্থান, আয় ও উৎপাদন বাণিজ্যে আরো অনেক বেশি অবদান রাখতে পারে। এ জন্য উক্ত খাতে বিদ্যমান সমস্যাসমূহ চিহ্নিত করে তা সমাধানের লক্ষ্যে বাস্তব ও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। বিসিক ও ইপিবিসহ অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে ট্রেডভিত্তিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি তৈরি, উদ্যোক্তা সৃষ্টি,  পুঁজি সহায়তা, দেশ-বিদেশে মেলা ও প্রদর্শনীর আয়োজন, উৎপাদিত পণ্যসামগ্রীর বাজার খুঁজে বের করা প্রভৃতি বহুমাত্রিক আয়োজনে কুটিরশিল্প বিকাশে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার। ভাটিবাংলার হাওর অঞ্চলকে ঘিরেও সম্প্রসারিত হতে পারে এই কুটিরশিল্প। হাওরাঞ্চলে ৬-৭ মাস থাকে পানি। বাকি সময় শুকনো সবুজ প্রান্তর। এ কারণে শুকনোর ৬ মাস শুধুমাত্র ফসল উৎপাদন নিয়ে ব্যস্ত থাকেন হাওরবাসী। একমাত্র এই ফসলের ওপর নির্ভরশীল এই হাওরবাসীর জীবন-জীবিকা আর ভবিষ্যৎ। অসীম সম্ভাবনার এই হাওরাঞ্চলে কর্মসংস্থানের বিপুল সম্ভাবনা সত্ত্বেও ৫০ লাখের অধিক জনসংখ্যা বছরের ছয় মাস বেকার সময় কাটায়। তাদের জীবনমান উন্নয়নে মুড়ি, চিঁড়া, খই তৈরি ও প্যাকেটজাতকরণ, শুঁটকি তৈরি ও প্রক্রিয়াজাতকরণ, হস্ত ও কুটিরশিল্প খাতে ভাটিবাংলার নারীদের নিয়োজিত করা গেলে খুলে যাবে অপার সম্ভাবনার দুয়ার। সরকার যদি কুটিরশিল্পের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ নীতি বাস্তবায়নে উদ্যোগী হয় তাহলে সার্বিকভাবে দেশের অনতিক্রম্য মাধ্যমিক স্তর এবং মাধ্যমিক পাসের শিক্ষা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া তরুণ-তরুণীরাও যুক্ত হবে এই শিল্পের সঙ্গে। একটি বৃহৎ পরিকল্পনায় অগ্রসর হলে এই কুটিরশিল্প দেশের উন্নয়ন ও অর্থনীতিতে রেনেসাঁ ঘটাবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।

এসএম মুকুল/

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here