নোয়াখালী মুজাহিদুল ইসলাম সোহেল, নোয়াখালী প্রতিনিধি:: নোয়াখালীতে কলেজ পড়ুয়া এক ছাত্রীকে ইভটিজিং করা অবস্থায় প্রতিবাদ করায় ওই ছাত্রীর পরিবারের উপর হামলা করেছে ইভটিজারসহ বখাটেরা। এ সময় বখাটেদের ছুরি ও লাঠির আঘাতে ওই ছাত্রী এবং তার বাবা-মাসহ পরিবারের ৫ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছে। আহতরা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

মঙ্গলবার বিকালে জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের মনপুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হচ্ছেন, ইভটিজিং এর শিকার নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া ইসলাম মুন্নি (১৮), তার বাবা মো. ইউসুফ, মা জেসমিন আক্তার, বোন শারমিন আক্তার ও মামি ডলি আক্তার।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসারত ওই ছাত্রীর বাবা মো. ইউসুফ জানান, পার্শ্ববর্তী আলামপুর গ্রামের রফিক উল্যাহ্‌’র ছেলে রাজু দীর্ঘদিন পর্যন্ত তার কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে উত্যক্ত করে আসছিল। বিষয়টি তিনি ইউনেয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে অবহিত করেন। কিন্তু, মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে তার মেয়ে কলেজ শেষ করে বাড়ির সামনে মাইজদী-রাজগঞ্জ সড়কে নেমে হেঁটে বাড়ির দিকে যাচ্ছিল। এ সময় পিছন থেকে রাজু তাকে ডাকতে থাকে। রাজুর ডাক না শুনে মেয়েটি খুব দ্রুত হেটে বাড়ির কাছাকাছি চলে যায়। এ সময় রাজু একটি লাঠি নিয়ে দৌড়ে এসে মেয়েকে বেদম মারতে থাকে। মেয়ের চিৎকারে তিনি, তার স্ত্রী, ছোট মেয়ে ও শ্যালকের স্ত্রী ছুটে আসে। তারা আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই রাজুর ভাই সাজু, স্থানীয় বখাটে রিয়াজ, জাকের হোসেন ও বাবুসহ কয়েকজন ছুরি ও লাঠি নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে।

এ সময় বখাটেরা ছুরি দিয়ে তাকে ও তার স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে তার দুই মেয়ে ও শ্যালকের স্ত্রীকে বেদম মারধর করে। বর্তমানে তিনি এবং তার স্ত্রীসহ আহত পাঁচজনই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

কলেজ ছাত্রীর মামা আল আমিন বলেন, তিনি তখনও বাড়িতে ছিলেন। বাড়ির পাশে পরিবারের সদস্যদের চিৎকার শুনে দৌড়ে আসেন। এ সময় আশপাশ থেকেও লোকজন বাহির হতে থাকলে বখাটেরা চলে যায়। এক পর্যায়ে আহতদের রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে বাধা দেয় বখাটেরা।

পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করানো হয়।

তিনি জানান, হাসপাতালে আহতদের ভর্তি করিয়ে তার শিশুপুত্রসহ তিনি ওষধের জন্য হাসপাতালের বাহিরের প্রধান ফটকে গেলে হামলাকারী এবং ওই বখাটেরা আরো কয়েকজন সহ তাকে অপহরণ করার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে আশপাশের লোকজন তাকে রক্ষা করে। বিষয়টি বেগমগঞ্জ থানায় অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

রাজগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সেলিম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বৈদ্যুতিক মিটার বসানোকে কেন্দ্র করে এ হামলার ঘটনা ঘটে। ইভটিজিং এর কোন ঘটনা আমার জানা নেই।

বেগমগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুব মোর্শেদ জানান, খবর পেয়ে তিনি আজ দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টি ইভটিজিং নয় দাবী করে তিনি বলেন, তাদের পারিবারিক বিরোধের জের ধরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় আহতদের থানায় মামলা দিতে বলা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here