বদল।

তা যে সে বদল নয়। একেবারে বউ বদল। আবার পার্টনার বদলও বলতে পারেন।

গত শুক্রবার ভারতীয় নৌসেনার কয়েক জন অফিসারের বিরুদ্ধে বউ বদলের বিস্ফোরক অভিযোগ উঠেছে। পরস্পরের মধ্যে তাঁরা নাকি স্ত্রী দেওয়া-নেওয়া করেন, নিজের স্ত্রীকে সহকর্মী বা জুনিয়রের হাতে তুলে দিয়ে সহকর্মী বা জুনিয়রের স্ত্রীকে আপন করে নেন অফিসাররা। যুদ্ধজাহাজ আইএনএস কোচিতে কর্মরত এক নৌসেনা অফিসারের বিবাহ বিচ্ছিন্না স্ত্রী এমনই অভিযোগ করেছেন। ২০১৩ সালে অভিযোগটি প্রথম সামনে এসেছিল। কিন্তু তখন বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়। সুপ্রিম কোর্ট নতুন করে অভিযোগটির তদন্ত শুরুর নির্দেশ দেওয়ায় বিষয়টি আবার সামনে এসেছে।

উইকি বলছে, একগামিতার একঘেয়েমি কাটানোই পার্টনার চেঞ্জের মূল কারণ। এই পথেই আনন্দ খুঁজে নেন পুরুষ ও মহিলাদের একটা বড় অংশ। অন্য অনেক কিছুর মতোই এর পথপ্রদর্শকও পশ্চিমী দুনিয়া। ছ’য়ের দশকে মার্কিন মুলুকে সেক্স রেভলিউশনের জন্ম। সে সময় বিভিন্ন যৌন রোগ থেকে বাঁচতে কনট্রাসেপটিভ পিলের সহজলভ্যতা সামাজিক ভাবে আলোড়ন তোলে। আর তখনই ওয়াইফ বা পার্টনার সোয়াপের বিষয়টি নিয়ে প্রথম প্রকাশ্যে আলোচনা শুরু হয়।

যদিও ইতিহাস বলছে, ষোড়শ শতকে প্রথম আমেরিকায় স্ত্রী বদলের ঘটনা ঘটে। ১৫৮৭-এর ২২ এপ্রিল বিয়ে করেন জনৈক জন ডে এবং লেনায়ে। এর পর জন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুর এডওয়ার্ড কেলির সঙ্গে প্রথম বউ বদলের ঘটনাটি ঘটান। এক রাতের জন্য জনের সঙ্গী হন কেলির স্ত্রী এবং কেলি রাত কাটান লেনায়ের সঙ্গে। এর পর ১৮, ১৯ এবং ২০ শতকে মানুষের জীবনযাত্রা দ্রুত বদলাতে থাকে। আর স্ত্রী-বদলও হয়ে ওঠে লাইফস্টাইলের সাধারণ ঘটনা।

আফ্রিকা, আরব এবং নিউগিনির সমাজ জীবনে বউ বদলের ঘটনাটি সভ্যতার প্রায় প্রথম থেকেই খুব স্বাভাবিক। তবে এতে ঝুঁকিও খুব একটা কম নয়। ক্যাজুয়াল সেক্সে অভ্যস্তরা কোনওরকম প্রটেকশন না নিলে যে সব শারীরিক সমস্যা ফেস করেন, পার্টনার সোয়াপিংয়ের ক্ষেত্রেও সেই রিস্ক থেকে যায়।

সাম্প্রতিক একটি গবেষণা জানাচ্ছে, ওয়াইফ সোয়াপিংয়ের কিছু অলিখিত শর্ত রয়েছে।

সেগুলি কী?

১) পার্টনার চেঞ্জের ক্ষেত্রে সবসময় যে বিবাহিত কাপল হতে হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু যৌন অভিজ্ঞতা থাকতেই হবে।

২) পার্সোনাল ডিটেলস জানানোর কোনও প্রয়োজন নেই।

৩) রিয়্যাল অ্যাকশনের আগে শারীরিক পরীক্ষা প্রায় সব ক্ষেত্রেই করে নেওয়া হয়।

মুম্বই, দিল্লি, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, লখনউয়ের মতো মেট্রো শহরে ওয়াইফ সোয়াপিং এখন খুব স্বাভাবিক ঘটনা। পিছিয়ে নেই কলকাতাও।

সমীক্ষা বলছে, প্রায় ২৭ শতাংশ বিবাহিত দম্পতি ডেলি রুটিনে পার্টনার সোয়াপিং এনজয় করেন। আমাদের সমাজে এই অভ্যাসের কতটা প্রভাব পড়ে? মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘বৈবাহিক বা প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্কের বাইরে কারও প্রতি মানুষ আকৃষ্ট হবেন না, এমনটা হলফ করে বলা যায় না ঠিকই, কিন্তু যদি শুধু ক্লান্তি বা বোরডম কাটানোর জন্য কেউ বারংবার বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হতে থাকেন সেক্ষেত্রে সেই যৌনতা থেকেও নতুন ক্লান্তির পরিস্থিতি আসবে না এমনটা কিন্তু বলা যায় না। তার প্রভাব কমিটেড সম্পর্কেগুলোর ওপরেও পড়ে এবং বহু ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্পর্কের মধ্য শ্রদ্ধা, ভালবাসা থাকা সত্ত্বেও আমরা কিছু ভাঙনের ফাটল দেখতে পাই।’’

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here