জলবায়ু অর্থায়ন বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিতসোহানুর রহমান :: পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, ‘টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনসহ বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে পরিণত হতে অন্যতম প্রধান প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাব। এসডিজি অর্জনে আমাদের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন। পরিবর্তিত জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবেলায় সব ক্ষেত্রে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়ার পাশপাশি আমাদের ক্ষয়-ক্ষতির দিকগুলো বিশ্বের কাছে তুলে ধরে টেকসই প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠাতে হবে। শুধু আমরা ক্ষতিগ্রস্থ (ভালনারেবল) বলে চিল্লাপাল্লা বা কান্নাকাটি করলে জলবায়ু তহবিলের টাকা পাওয়া যাবেনা’।

শনিবার (২৭ জানুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) জলবায়ু অর্থায়ন বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, উপযুক্ত পরিমান জলবায়ু তহবিল পেতে সক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে দক্ষতা ও সততার প্রমাণ দিতে হবে বাংলাদেশকে। জলবায়ু তহবিলের অর্থ স্বচ্ছতার সাথে ব্যয় করতে হবে। সবুজ জলবায়ু তহবিলে ভালো প্রকল্প সাবমিট করলে, কাজের মাধ্যমে সততার প্রমাণ দিতে পারলেই শুধু বাংলাদেশ অর্থ পেতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।

বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক আতিক রহমানের সভাপতিত্বে এসময় আরো বক্তব্য রাখেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. সালিমুল হক, ইউএনএফসিসিসির অভিযোজন কর্মসূচির পরিচালক ড. পল ডেসাঙ্কার, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: মুসলিম চৌধুরী প্রমুখ।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন  সম্মেলন সমন্নয়ক বিসিএসের ফেলো গোলাম রব্বানী । জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে অংশ অধিবেশন ও আলোচনায় তাদের মতামত ব্যক্ত করে।

এসময় মন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব আমাদের কৃষি, বন, মৎস্য, জনস্বাস্থ্য, প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠছে। তাই জলবায়ু পরিবর্তনকে অগ্রধিকার হিসেবে চিহ্নিত করা প্রয়োজন’।

পরিবেশ মন্ত্রী আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় অর্থ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর গুরুত্ব উপলব্ধি করেই সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় ইতিমধ্যে ‘জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা’ প্রণয়ন এবং ‘জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড’ ও ‘জলবায়ু পরিবর্তন রেজিলিয়েন্স ফান্ড’ নামে দুটি তহবিল গঠন করেছে। পরিবেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য আমাদের স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।

ডিএফআইডি ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রকাশ কর্মসূচির সহযোগিতায় ২ দিন ব্যাপি ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন ক্লাইমেট ফাইন্যান্স’ শীর্ষক সম্মেলনের আয়োজক বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজ।

ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ এবং বাংলাদেশ ইনডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্চ এন্ড ডেভেলপমেন্টও এই সম্মেলনের অংশীদার সংস্থা। সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে যোগ দেবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আ: মুহিত।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here