বাংলাদেশে যে ট্রানজিট হচ্ছে তা বিশ্বের কোন দেশে নেই। ট্রানজিট কিভাবে হবে, দেশ ব্যবসায়িকভাবে কি উপকার পাবে এ ব্যাপারে সরকারের কোন নীতিগত পরিষ্কার ধারনা নেই। অথচ একমাত্র ভারতের স্বার্থেই এবং ক্ষমতায় টিকে থাকতে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সার্বভৌত্ব বিপন্ন করে দেশের ভূ-খন্ড ব্যবহারের জন্য অনুমতি দিতে সরকার ট্রানজিট চালু করতে যাচ্ছে। এই ট্রানজিট চালু হলে বাংলাদেশে যে পরিমান ট্রাক পন্য পরিবহন করে তার সমপরিমান ভারতীয় ট্রাক চলাচল করবে। এতে করে দেশীয় ট্রাক চলাচলে বাধার সৃষ্টি হবে। ব্যবসায়ি এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা বেকার হয়ে পরবে। দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে।
সোমবার সকালে রংপুর প্রেসক্লাবে ডাকঘর আয়োজিত ট্রানজিট-করিডোর ও প্রস-াবিত এশিয়ান হাইওয়ে এবং বাংলাদেশের স্বার্থ শীর্ষক এক গোল টেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।
ডাকঘর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নাহিদ নলেজ এর সভাপতিত্বে আলোচক হিসেবে ছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও জাতীয় তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব আনু মোহাম্মদ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ সভাপতি ও জেলা মটর মালিক সমিতির সভাপতি আবু আজগার আহম্মেদ পিন্টু, ইত্তেফাক রংপুর প্রতিনিধি ওয়াদুদ আলী, বাসদ জেলা আহবায়ক কমরেড আনোয়ার হোসেন বাবলু, রংপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির ডাইরেক্টর রবি সোমানী, রংপুর জেলা ট্রাক ও ট্যাংকলরী শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রউফ মিয়া প্রমুখ। মুল প্রবন্ধ পাঠ করেন লিপি দেব গুপ্তা।
আনু মোহাম্মদ বলেন, রাষ্ট্রের নীতি দয়া বা ব্যাক্তিগত মমতা দিয়ে চলে না। রাষ্ট্রকে একটি নীতির মধ্যে চলতে হবে। ভারত আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা করেছে কিংবা পাশ্ববর্তী দেশ এজন্য দয়া করার কিছুই নেই। ট্রানজিট কিংবা করিডোর শুধু ভারতকে নয় ব্যবসায়িক লাভ বিবেচনা করে স্বচ্ছতার মাধ্যমে চালু করতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সবার জন্য উমুক্ত থাকবে আর অন্য কোন দেশ বাংলাদেশের জন্য উমুক্ত থাকবে না তা কোন নীতি হতে পারে না। ট্রানজিটের নামে ভারতের স্বার্থে রেলপথ বা সড়ক পথ নির্মানে যে অর্থ ব্যয় হবে তা ঋণ নিয়ে পরিশোধ করতে হবে বাংলাদেশকে আর এর সুফল ভোগ করবে ভারত এ কোন নীতি। ভারতকে সুবিধা দেওয়ার জন্য করিডোর কিংবা ট্রানজিট দেশের মানুষ কিছুতেই মেনে নেবে না। সমগ্র এশিয়ার দেশ গুলোর ব্যবসায়িক লাভ লোকসানের হিসাব করে ট্রানজিট দিতে হবে।
আবু আজগার আহম্মেদ পিন্টু বলেন, আমাদের দেশের সরকারকে ভাবতে হবে আমরা ভারত না এশিয়াকে ট্রানজিট দিচ্ছি। তিনি বলেন, আমাদের দেশের রাস-ঘাট যে ভাবে তৈরী সেই রাস-া দিয়ে ভারতীয় বেশী ওজনের ট্রাকগুলো চলাচল করলে অল্প সময়ে তা নষ্ট হয়ে যাবে। তা মেরামত করতে দেশের বিপুল পরিমান ক্ষতি হবে।
তিনি বলেন, সমগ্র এশিয়ার মধ্যে ট্রানজিট হবে যাতে করে বাংলাদেশ সকল দেশে উমুক্ত হবে এবং ট্রানজিট ব্যবহার করলে দেশ কি পরিমান লাভবান হবে সব চিন-া করে। আনোয়ার হোসেন বাবলু বলেন, ভারতের স্বার্থেই ট্রানজিট করিডোর করা হচ্ছে। এতে ভারতই বেশী লাভবান হবে বাংলাদেশ হুমকির মুখে পড়বে।
জহুরুল ইসলাম জহির, রংপুর