পবিত্র ঈদুল আযহায় রাজধানীতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। জাতীয় ঈদগাহের নিরাপত্তায় সাদা পোশাকের পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি মনিটরিংয়ের জন্য সিসি ক্যমেরাও বসানো হয়েছে।

ঈদের ছুটিতে নিজেদের বাসা-বাড়ি ও বিপণী বিতানের নিরাপত্তায় কিছু পরামর্শও দেওয়া হয়েছে ডিএমপির পক্ষ থেকে।

ঈদের ছুটিতে অনেকটাই ফাঁকা রাজধানীর নিরাপত্তায় করণীয় ঠিক করতে এরই মধ্যে ডিএমপির নয়টি জোনের উপ-কমিশনারদের (ডিসি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

এ জোনগুলো হলো- মতিঝিল, ওয়ারী, তেজগাঁও, মিরপুর, গুলশান, উত্তরা, রমনা, লালবাগ ও কূটনৈতিক এলাকা নিয়ে গঠিত চ্যান্সারি জোন।

সূত্রমতে, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করবে থানা, টহল ও গোয়েন্দা পুলিশ। প্রতিটি জোনের ডিসিরা এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা সমন্বয় করবেন।

ছুটিতে মহানগরীর প্রত্যেকটি এলাকায় সংশ্লিষ্ট থানার একজন উপ-পরিদর্শকের (এসআই) নেতৃত্বে পুলিশ পালা করে টহল দেবে। তাদের সহযোগিতা করবে টহল ও সাদা পোশাকের পুলিশ।

বাসা-বড়ির পাশা বিভিন্ন বিপণীবিতানেও থাকবে পুলিশের কড়া নজর। এক্ষেত্রে বিপণী বিতানগুলোর নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীদের সাথে সমন্বয় করে সেসব জায়গায় নিরাপত্তা নিশ্চত করা হবে।

এছাড়া ছিনতাই, চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধ ঠেকাতে রাতের বেলায় বাড়ানো হবে পুলিশি টহল।

ছুটি শেষে রাজধানীমুখী মানুষের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা থাকবে বিভিন্ন বাস ও রেল স্টেশনে। বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে কূটনৈতিক পাড়ায়।

এদিকে ঈদুল ফিতরের চেয়ে কোরবানির ঈদে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

কারণ হিসেবে তারা বলছেন, এ ঈদে কোরবানির পশুর চামড়া ব্যবসাকে  কেন্দ্র করে নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এসময় চামড়া সংগ্রহ নিয়ে এলাকা ভিত্তিক বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষও ঘটে থাকে। এছাড়া রয়েছে চাঁদাবাজদের উৎপাত।

আর এসব ঠেকাতে আগে থেকেই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে তারা জানান।

ঈদের ছুটিতে রাজধানীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে ডিএমপির মুখপাত্র গোয়েন্দা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ) মো. মনিরুল ইসলাম  জানান, ‘কোরবানির ঈদ অন্য ঈদেও চেয়ে কিছুটা ব্যতিক্রম। এ ঈদে শুরু থেকেই নগদ টাকার লেনদেন থাকে বেশি। তাই এসব মাথায় রেখেই ঈদেও ছুটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে ফাঁকা নগরীতে যারা থাকেন তাদের যাতে কোন সমস্য না হয় সেজন্য থানা পুলিশ, টহল ও গোয়েন্দা পুলিশ সার্বক্ষণিক মাঠে থাকবে।’

চামড়া ব্যবসাকেন্দ্রীক নিরাপত্তা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘কোরবানির পশুর চামড়া ব্যবসার নিয়ন্ত্রন, চামড়া সংগ্রহসহ এ কেন্দ্রীক নানা ধরনের ঝামেলা হতে দেখা যায়। তাই এবার যাতে এটি না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে বাড়তি নিরাপত্তা থাকবে রাজধানীতে।’

ঈদের ছুটিতে পুলিশের গৃহীত এসব নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে রাজধানীবাসী নির্বিঘ্নে ঈদ উদযাপন করতে পারবে বলেও আশা করেন এ কর্মকর্তা।

ডিএমপির পরামর্শ:

ঈদের ছুটিতে যারা প্রিয়জনদের সাথে ঈদ করতে মহানগরী ছেড়ে যাবেন তাদের বাসার নিরাপত্তার জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছে ডিএমপি।

ডিএমপির সহকারী কমিশনার (জনসংযোগ) আশরাফ-উদ-দৌলা বলেন, ‘পুলিশের গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি নিজেরা কিছু সর্তকতা অবলম্বন করলে আর কোন সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে না।’

তিনি বলেন, ‘যারা বাড়ি যাবেন তাদের উচিত বাসার দারোয়ানকে সঠিক নিদের্শনা দিয়ে যাওয়া। একই সাথে দারোয়ানের বিস্তারিত পরিচয় সম্পর্কে আগে থেকেই অবগত হওয়া। এছাড়া প্রতিবেশিদের জানিয়ে বাড়ি যাওয়া, যদি রাজধানীতে কারও আত্বীয়-স্বজন থাকে তাহলে তাদের কাউকে বাসায় থাকার ব্যবস্থা করা।

এছাড়া যদি সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিশেষ কোন সমস্যা পরিলক্ষিত হয় তাহলে তা থানাকে অবগত করা।’

এছাড়া ঈদের সময় কোরবানির পশুর চামড়াকে ঘিরে কোন সমস্যা সৃষ্টি হলে তা নিকটস্থ থানাকে অবহিত করার জন্যও নগরবাসীর প্রতি আহবান জানান তিনি।

ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডট কম/ঢাকা

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here